ভয়ংকর রাসেল ভাইপার আতঙ্কে ঈশ্বরদীবাসী

পাবনা জেলার ঈশ্বরদীতে রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের আতঙ্কে রয়েছে এলাকায় বসবাস করা মানুষ। একের পর

এক বিষাক্ত রাসেল ভাইপার সাপের দেখা মিলছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকায় বেশি দেখা যাচ্ছে এই বিষধর সাপ।

সম্প্রতি উপজেলার পাকশী ইউনিয়নে রাসেল ভাইপারের কামড়ে এক শিশু বাচ্চার মৃত্যু হয়। বর্তমানে পাবনা জেলায় রাসেল ভাইপারের আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরএমও ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, রাসেল ভাইপার ভারত থেকে নদীপথে ঈশ্বরদী আসছে। এটা খুবই ভয়ঙ্কর বিশাক্ত সাপ। তাই কৃষকদের পায়ে বুট এবং সাবধানে কাজ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ঈশ্বরদী হাসপাতালে ১ জনকে দেওয়ার মতো ভ্যাকসিন রয়েছে। বাজারে একটি ভ্যকসিনের বাজার দর প্রায় ১২-১৩ হাজার টাকা।

এর আগে ২০১৮ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে এক ব্যক্তি পদ্মার চর থেকে রাসেল ভাইপারকে অজগর সাপ ভেবে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর রাসেল ভাইপারের কামড়ে তিনি মারা যান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত ২-৩ বছর ধরে ঈশ্বরদীতে বিরল প্রজাতির এই মারাত্মক বিষধর রাসেল ভাইপারের বিস্তার ঘটেছে। এর কামড়ে কয়েকজন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

রাসেল ভাইপার সম্পর্কে তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক এবং বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা জানান, রাসেলস ভাইপার (Russell’s Viper) সাপটি

‘চন্দ্রবোড়া’ বা ‘উলুবোড়া’ নামেও পরিচিত। আইইউসিএনের ২০১৫ সালের লাল তালিকা অনুযায়ী রাসেলস ভাইপার বাংলাদেশে সংকটাপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে। এটি ইঁদুর ও টিকিটিকি খায়।

বসতবাড়ির আশেপাশে এদের প্রাচুর্যতা বেশি থাকায় খাবারের খোঁজে রাসেলস ভাইপার অনেক সময় লোকালয়ে চলে আসে এবং মানুষকে দেখে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে কখনও কখনও আক্রমণও করে।

জোহরা মিলা বলেন, সাধারণত পদ্মার চরাঞ্চল, নদী অববাহিকা ও বরেন্দ্র এলাকায় উঁচু-নিচু জমিতে এই সাপটি বেশি দেখা যায়। সাধারণত জুন-জুলাই মাসে এর প্রজননকাল।

এটি ডিম দেওয়ার বদলে সরাসরি ৬-৬৩টি বাচ্চা প্রসব করে। দেখতে মোটা, লম্বায় ২ থেকে ৩ ফুট দৈর্ঘ বিশিষ্ট এই সাপের গায়ে ছোপ-ছোপ গোলাকার কালো দাগ থাকে।

ঘন ঘন জিহ্বা বের করে হিসহিস শব্দ করে। সাপটি সম্পর্কে যার ধারণা নেই তিনি এটিকে অজগর ভেবেই ভুল করবেন।

জোহরা মিলা বলেন, এই সাপের বিষ ‘হেমোটক্সিন’ হওয়ায় মাংস পঁচেই আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়। সাপটির কবল থেকে বাঁচতে সচেতনতাই কার্যকর পথ। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী সাপটি সংরক্ষিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *