৬ লাখ সদস্যের বিশাল বাহিনী নামাচ্ছে আ.লীগ

সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন এখন গরম। নির্বাচনের আগে রাজনীতির মাঠ দখলে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দলগুলো; যে দৌড়ে পিছিয়ে থাকতে চায় না ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।

রাজনীতির মাঠ নিজেদের করে রাখতে ও বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের খবর সাধারণদের কাছে পৌঁছে দিতে ৬ লাখ সদস্যের বিশাল বাহিনী নামাচ্ছে আওয়ামী লীগ।

এসব কর্মীর কাজ হবে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেওয়া। তাদের নানা অভিযোগ নিয়ে কথা বলা। সমাধান খুঁজে বের করা। উন্নয়ন জোয়ারের প্রচার করা।

একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে বিরোধী দলগুলো যেসব কথা বলে বেড়াচ্ছে। তার বিপরীতে সরকার ও আওয়ামী লীগের পক্ষে তথ্য তুলে ধরার কাজও তাদের।

ছয় লাখ সদস্যের বিশাল এই কর্মী বাহিনী মাঠে নামার উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। যাকে বলা হচ্ছে ‘অফলাইন ক্যাম্পেইন’। দলটির একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ারকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির হয়ে কাজ করতে দেখা গেছে। ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এইচ টি ইমামের চেয়ারে বসতে দেখা যায় তাকে। প্রয়াত এইচ টি ইমাম ২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় থেকে আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

সূত্র জানিয়েছে, অফলাইন ক্যাম্পেইন অংশ নেওয়া এসব কর্মী শেখ হাসিনার অর্জনকে মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দেবে। যাতে সবাই আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। এ জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

অফলাইন এই ক্যাম্পেইন নিয়ে কবির বিন আনোয়ার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, নির্বাচনী প্রচারের জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা শেখ হাসিনার অর্জন মানুষের দ্বারে নিয়ে যাবে। এতে আসন্ন নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতিও বাড়াবে।

এই ক্যাম্পেইনে অংশ নেওয়া একাধিক সদস্যের বরাত দিয়ে জানা গেছে, গত সোমবার ঢাকায় ১০০ জনকে নিয়ে কর্মশালা করা হয়। এটা ছিল প্রথম ব্যাচ। এ ছাড়াও ব্যাচ করে সারা দেশে কর্মশালার আয়োজন করা হবে। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তৃতা করেন।

মাস্টার ট্রেইনারদের জেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষক ও মেন্টর তৈরির কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার ময়মনসিংহ শহরের একটি মিলনায়তনে প্রথম প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মাঠপর্যায়ের কিছু প্রচারকর্মীও ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কবির বিন আনোয়ার। পর্যায়ক্রমে এ কার্যক্রম অন্যান্য জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে হওয়ার কথা রয়েছে।

এখানে একটি বড় প্রশ্ন হলো কীভাবে এসব কর্মী নির্বাচন করা হবে? এ বিষয়ে দলীয় সূত্র বলছে, সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে সারা দেশে ১২টি দল গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি দল ছয়টি জেলার দায়িত্ব পালন করবে। তারা মূলত তৃণমূল থেকে মাঠপর্যায়ের প্রচারকর্মী বাছাই করবে। এরপর তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা হবে। সবার ওপরে থাকবেন ‘মাস্টার ট্রেইনার’। ইতিমধ্যে ২০০ জনের মতো মাস্টার ট্রেইনার বাছাই করা হয়েছে।

এই উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে। সহায়ক হিসেবে কাজ করবে কেন্দ্রীয় কল সেন্টার। এ ছাড়া এই পুরো কর্মযজ্ঞ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে সমন্বয় করবে একটি তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ দল।

সূত্র : প্রথম আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *