হিজবুল্লাহ কি ইসরায়েলকে হারানোর সামর্থ্য রাখে

এক সপ্তাহের ‘বেশি সময় ধরে ই’সরায়েল একদিকে যেমন গাজায় একের প’র এক বোমা’ ফেলছে, তেমনি লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহ গে’রিলাদের সঙ্গেও ‘ছো’টখাটো সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। হিজবুল্লাহ’ গেরিলারা ঘো’ষণাও দিয়েছে যে তারা ইসরায়েলের সঙ্গে একটি’ পূর্ণ মাত্রার ‘যুদ্ধে জড়াতে প্রস্তুত।

দুই পক্ষের’ মধ্যে উত্তেজনা বা’ড়ায় পর্যবেক্ষকেরা আশঙ্কা করছেন, শী’র্ষ নেতাদের আদেশ এবং ইরা’নের সহযোগিতায় ইসরায়েলের স’ঙ্গে পূর্ণ মাত্রায় ‘যুদ্ধ শুরু করে দিতে পারে হিজবুল্লা হ গেরিলারা।

কিন্তু সামরি’ ক দিক দিয়ে ইস’রায়েলের মতো শক্তিশালী একটি দেশের স’ঙ্গে তারা কি পারবে লড়াই করতে’? এ-সংক্রান্ত এক আলোচনায় কাতার’ভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল জাজিরার বিশ্লেষণে ‘কয়ে কটি বিষয় উঠে এসেছে:


ইসরায়ে’ল-হিজবুল্লাহ’ যুদ্ধ আগেও হয়েছে
২০০৬ সালের জুল’ইয়ে সীমান্ত এলাকা থেকে ইসরায়েলের দুই সেনাকে ধরে’ নিয়ে গিয়েছিল হিজবুল্লা’হ গেরিলারা। এ ঘটনায় তীব্র সামরিক প্রতিক্রিয়া দে’খিয়েছিল ইসরায়েল।

বিষয়টিকে’ কেন্দ্র করে দুই পক্ষে’র মধ্যে টানা ৩৪ দিন যুদ্ধ পরিস্থিতি ‘বিরাজ করে। সে ‘সময় এগারো শর বেশি লেবানিজ প্রাণ হারিয়েছিল আর’ ইসরায়েল হারি’য়েছিল ১৬৫ নাগরিককে।

ওই যুদ্ধে শেষ’ পর্যন্ত কেউ বিজয়ী ‘না হলেও এটা ঠিক যে লেবাননের মানুষই স’বচেয়ে বেশি মূল্য’ দিয়েছে। রেডক্রসের তথ্য অনুযায়ী,’ ইসরায়েলের হাম’লায় সে সময় বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যুর পাশা’পাশি লেবান’নের প্রায় ৩০ হাজার বাড়ি, ১০৯টি সেতু এবং ৭৮টি স্বাস্থ্য’কেন্দ্র ধ্বংস হয়।

ওয়াশিংটনভি’ত্তিক থিংকট্যাং’ক আটলান্টিক কাউন্সিলের হিজবুল্লাহবিষয়’ক বিশেষজ্ঞ ‘নিকোলাস ব্ল্যান্ডফোর্ড বলেন, ২০০৬ সালের যুদ্ধে’র সময় হিজবুল্লাহ গেরি’লার সংখ্যা ছিল ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার। আ’র ই’সরায়েলে হামলার জন্য তাদের কাছে ছিল কাছাকাছি দূ’রত্বে আঘাত হানতে ‘সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র।

তবে বিগত ১৭ ‘বছরে হিজবুল্লাহর সামরি ক সক্ষমতা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বে’ড়েছে। ‘ব্ল্যান্ডফোর্ড বলেন, ‘’আমার মনে হয়, ১৯৪৮ সালে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প ‘র আজকের দিনে ইসরায়েলে সবচেয়ে বেশি ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর ‘সক্ষমতা এখন হিজবুল্লাহর আছে।’

হিজবুল্লাহ এ”খন কতটা শক্তিশালী
ব্ল্যান্ডফোর্ড ধারণা” করেন, বর্তমানে “সক্রিয় ও রিজার্ভ মিলিয়ে কমপক্ষে ৬০ হাজার “গেরিলা সেনা রয়েছে” হিজবুল্লাহর। আর ২০০৬ সালে “তাদের কাছে মাত্র “১৪ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র থাকলেও বর্তমানে এই সংখ্যা বে”ড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় দেড় লাখে।

হিজবুল্লাহর” কা”ছে থাকা ক্ষেপণাস্ত্রগু”লোর বেশির ভাগই স্বল্পপাল্লার হলেও ৩০০ কিলোমিটার দূর”ত্বে নির্ভুল আঘাত হানতে সক্ষম ইরানি” প্রযুক্তির কি”ছু ক্ষেপণাস্ত্রও এখন তাদের হাতে আছে।

ব্ল্যান্ডফোর্ড জানান, হি’জবুল্লাহর একটি ‘বি’শেষ বাহিনী’কে যুদ্ধের সময় ইসরায়েলে কী’ভাবে অনুপ্রবেশ কর’তে হবে, সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়’। তিনি বলেন,’ ‘ইসরায়েলি কর্মকর্তারা কয়েক বছর ধ’রে হিজবুল্লাহকে’ তাদের প্রধান হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে।’

মিডলইস্ট ইনস্টিটিউটে’র সংঘর্ষ ও শান্তি’ প্রোগ্রামের পরিচালক র‍্যান্ডা স্লিম আল জাজিরাকে’ বলেন, হিজবুল্লাহ ‘গেরিলারা সিরিয়া যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল এবং’ তারা প্রেসি’ডেন্ট বাশার আল-আ’সাদের পক্ষে লড়াই করেছে । ওই অ”ভিজ্ঞতা সংগঠনটির যুদ্ধে’র সক্ষমতা বাড়িয়েছে। ‘

র‍্যান্ডা বলেন, ‘’সিরিয়ার দীর্ঘ অ”ভিজ্ঞতায় তারা শহুরে যুদ্ধ এবং বুদ্ধিমত্তার দিক থেকে “নতুন দক্ষতা অর্জ”ন করেছে। তাদের গোয়েন্দা ব্যবস্থা অ”নেক উন্নত হয়েছে।’

হিজবুল্লাহ ও ইস’রায়েলের মধ্যে যুদ্ধের’ সম্ভাবনা কতটুকু
সীমান্তে হিজবুল্লাহ ও ‘ইসরায়ে’লের মধ্যে সংঘর্ষের উদাহরণ কম হলেও সা”ম্প্রতিক পরিস্থিতিতে” দুই পক্ষের ‘মধ্যে পূর্ণ মাত্রায় যুদ্ধ বেধে যাওয়ার ব”ড় আশঙ্কা রয়ে’ছে বলে মনে করেন র‍্যান্ডা স্লিম।

তিনি ব”লেন, ‘গাজায় হামলার “নৃশংসতার ওপর ভিত্তি করে হিজবুল্লাহ ও ইরা”ন ইসরা”য়েলের বি”রুদ্ধে দ্বিতীয় ফ্রন্ট খোলার সিদ্ধান্ত নিতে “পারে। যদি” হামাস যোদ্ধারা হত্যার শিকার হতে থাকে, তবে হিজবুল্লাহ এ”তে নাক গলাতে পারে।’

ঝুঁকি “থাকা সত্ত্বেও ব্ল্যান্ডফোর্ড বি”শ্বাস করেন, ইরান ও হিজবুল্লাহ সংযম দে”খাবে। তি”নি ব্যাখ্যা করেন, ইরানে ইস”রায়েলি “এবং মার্কিন হাম”লা পরিকল্পনার বিরুদ্ধে হিজবুল্লাহ একটি বড় “ঢাল হিসেবে কাজ করে। সে” ক্ষেত্রে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ হলে” হিজবুল্লাহ বড় “ধরনের ক্ষতি”র মুখে পড়তে পারে। ইরান চাইবে “না তাদের প্রতিরোধ যোদ্ধারা ক্ষয় হয়ে যাক।

তবে যুদ্ধের সম্ভাবনা উ’ড়িয়েও দেননি ব্ল্যান্ডফো’র্ড। তিনি বলেন, ‘ইরান ইসরায়েলের বিরু’দ্ধে হিজবুল্লাহ’র মাধ্যমে প্রক্সি যুদ্ধের সূত্রপাত কর’তে পারে, যদি তারা মনে ‘করে যে এখনই ইসরায়েল আক্রমণ ‘করার সবচেয়ে উ’পযুক্ত সময়।’

এদিকে এ ধরনের যু’দ্ধের সম্ভাবনা নিয়ে ইস’রায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সত’র্কতা স্পষ্ট। পূর্ব ভূমধ্যসা’গরে দুটি বিমানবাহী রণতরী পাঠিয়েছে দেশটি। ”ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে ইসরায়েলে হামলা থেকে ‘নিবৃত্ত করাই এর উদ্দেশ্য।

হিজবুল্লাহ ”কি ইসরায়েলকে হা’রাতে পারবে
এ বিষয়ে র‍্যান্ডা স্লিম ‘মনে করেন’, ইস’রায়েলকে বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি ‘করার সক্ষমতা হিজ’বুল্লাহর আছে। তিনি বিশ্বাস করেন, ইসরায়েলে’র গুরুত্বপূর্ণ ‘অবকাঠামো ।।

যেমন বেন-গুরিয়ন বিমা’নবন্দর এবং’ প্রধান বিদ্যু’ৎ গ্রিড ধ্বংস করে দেওয়ার মতো’ সক্ষমতা হিজ’বুল্লাহর আছে। তবে শেষ পর্যন্ত ইসরায়েল লেবাননের ‘বেশির ভাগ অংশ ধ্বং’সস্তূপে পরিণত করতে পারে।

র‍্যান্ডা যুক্তি দেন, সিরিয়ায় হিজবু’ল্লাহ বাহিনী কি’ছু মিলিশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে ব’ড় সফলতা দে’খিয়েছে, তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর শক্তি’শালী মেশিনের তুল’নায় এসব কিছুই নয়।

পর্যবেক্ষকদের ‘মতে, এ মুহূর্তে হিজবুল্লা’হ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে গাজার’ বাসিন্দা ও হামাস ‘যোদ্ধাদের ওপর চাপ কিছুটা কমতে পা’রে। তবে এই যুদ্ধ লে’বাননের জন্য ভয়ংকর পরিণতি নিয়ে আসবে, ‘আর বিপুল ক্ষতি’র মুখে পড়বে ইসরায়েলও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *