হারুন-সানজিদা বিয়ে করেছেন কিনা জানালেন সানজিদার বোন

ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে নির্যাতনের ঘটনার পর এখনো থেমে নেই আলোচনা। পুলিশের বরখাস্ত অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদের সঙ্গে ডিএমপির অপরাধ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সানজিদা আফরিন নিপার বিয়ে হয়েছে কিনা তা নিয়েও সামাজিক যোগােযাগমাধ্যমে প্রচার হচ্ছে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গণমাধ্যমে তাদের বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সানজিদার বড় বোন হোসনে আরা কামনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই অপপ্রচারে তারা বিব্রতবোধ করছেন বলে তিনি উল্লেখ করে বলেছেন, তাদের মধ্যে বিয়ে হয়নি। যেহেতু বিয়ে হয়নি, তাই ছাড়াছাড়িরও প্রশ্ন নেই।

সানজিদার পারিবারিক সূত্র জানায়, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার নগদা শিমলা ইউনিয়নে সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান সানজিদা আফরিন নিপা। তার বাবা মো. হোসেন আলী বার্ধক্যজনিত কারণে গত বছর মারা যান। প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পরবর্তী সময়ে উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি ছিলেন উপজেলার নগদা শিমলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাতবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হোসেন আলী দীর্ঘদিন গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলীর চার মেয়ের মধ্যে সানজিদা আফরিন নিপা তৃতীয়। বড় মেয়ে হোসনে আরা কামনা সুভি ভিএম সরকারি পাইলট মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক। দ্বিতীয় মেয়ে তানজিনা আফরিন স্মৃতি একজন চিকিৎসক। ছোট মেয়ে সাদিয়া আফরিন বন্যা বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক। তাদের পরিবারের খ্যাতি গোপালপুরে ছড়িয়ে আছে।

সানজিদার পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ২০১৭ সালের ১০ মার্চ গাজীপুরের কাপাসিয়ার বাসিন্দা আজিজুল হক মামুনের সঙ্গে সানজিদা আফরিন নিপার বিয়ে হয়। পারিবারিকভাবে এই বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়। তবে এই বিয়েতে সানজিদার তেমন সম্মতি ছিল না। এ কারণে বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সঙ্গে তার বনিবনা হচ্ছিল না। সানজিদা দীর্ঘদিন তার স্বামীর বাড়ি গাজীপুরে এএসপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

চলতি বছরের শুরুর দিকে সানজিদা ঢাকায় বদলি হন। সাম্প্রতিক ঘটনায় এডিসি হারুনের সঙ্গে আগে বিয়ে হয়েছিল, তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে—এমন গুঞ্জন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে। বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন সানজিদার বোন হোসনে আরা কামনা।

তিনি বলেন, সানজিদার বিয়ে হয়েছে আজিজুল হক মামুনের সঙ্গে। রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুনই সানজিদার স্বামী। এডিসি হারুন তার কলিগ। তার সঙ্গে সানজিদার বিয়ে হয়নি। বিয়ে না হলে তো ছাড়াছাড়িরও প্রশ্ন নেই।

সানজিদাসহ তার অন্য বোনদের শিক্ষক ও পারিবারিকভাবে ঘনিষ্ঠ এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সানজিদার বিয়ের অনুষ্ঠানে আমিও গিয়েছিলাম। বরেণ্য অতিথিরাও ছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। পরে সময়ে তার আর কোনো বিয়ের খবর আমার জানা নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন খবরে আমরাও হতবাক।’

আজিজুল হক মামুনের সঙ্গে সানজিদার বিয়ের বিষয়ে জানিয়েছেন গোপালপুরের নগদা শিমলা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার (বিয়ের কাজী) শামছুল হক। তিনি বলেন, ২০১৭ সালের ১০ মার্চ পারিবারিকভাবে ঘটা করে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়।

প্রসঙ্গ, এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে পুলিশ নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ।

এই দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ভুক্তভোগী ও তাদের সহপাঠীদের অভিযোগ- পুলিশের রমনা বিভাগের এডিসি হারুন অর রশিদ তাদের থানায় নিয়ে বেদম পিটিয়েছেন। ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দেওয়ার পরও হারুনের সঙ্গে ১০-১৫ পুলিশ সদস্য মিলে তাদের পেটান।

পুলিশ সূত্র জানায়, এডিসি হারুনের সঙ্গে শাহবাগের একটি হাসপাতালে পুলিশের এক নারী কর্মকর্তা আড্ডা দিচ্ছিলেন। সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে ওই নারী কর্মকর্তার স্বামী হাজির হন। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। পরে এডিসি হারুন সেখান থেকে চলে যান। পরে পুলিশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের শাহবাগ থানায় ডেকে নিয়ে মারধর করে।

One thought on “হারুন-সানজিদা বিয়ে করেছেন কিনা জানালেন সানজিদার বোন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *