হাঁটুর ওপর কাপড় উঠে গেলে অজু ভাঙবে?

নামাজের মতো মৌলিক ইবাদত ছাড়াও সবসময় অজু করার বিশেষ ফজিলত আছে ইসলামে। হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বলেছিলেন, ‘হে আমার

বেটা! সম্ভব হলে সবসময় অজু অবস্থায় থাকবে। কেননা মৃত্যুর ফেরেশতা অজু অবস্থায় যার জান কবজ করেন তার শাহাদাতের মর্যাদা লাভ হয়।’ (শুয়াবুল ঈমান, বায়হাকি, হাদিস, ২৭৮৩)

অজুর মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয় বলেও জানিয়েছেন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। বর্ণিত হয়েছে, ‘যখন কোন মুসলিম বা মুমিন বান্দা অজুর সময় মুখমণ্ডল ধোয়, তখন তার চোখ দিয়ে তার করা পাপরাশি পানির সঙ্গে কিংবা

পানির শেষবিন্দুর সঙ্গে বের হয়ে যায়। আর যখন সে তার দুই হাত ধৌত করে তখন হাত দিয়ে করা গুনাহগুলো পানির সঙ্গে বা পানির শেষ ফোটার সঙ্গে ঝরে যায়। এরপর সে যখন তার পা দু’টি ধৌত করে, তখন তার দু’পা দিয়ে

করে গুনাহ পানির সঙ্গে বা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে বেরিয়ে যায়। এমনকি সে তার যাবতীয় (সগীরা) গুনাহ থেকে মুক্ত ও পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন হয়ে যায় । (মুসলিম, হাদিস, ২৪৪)। অজু করার নিয়ম হলো- পূর্ণ মুখ বা

চেহারা ধোয়া, দুই হাত কনুইসহ ধোয়া, মাথার চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ করা, দুই পা টাখনুসহ ধোয়া। এ বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, হে মুমিনগণ! যখন তোমরা নামাজের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন তোমরা

তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাতগুলো কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও এবং তোমাদের মাথায় মাসেহ কর, এবং পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে নাও। এবং যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে। (সূরা মায়েদা, (৬) আয়াত, ৫)

অজু ভঙ্গের সাতটি কারণ রয়েছে, এই কারণগুলো পাওয়া গেলে অজু ভেঙে যাবে এবং অজু সংশ্লিষ্ট ইবাদতগুলোর জন্য নতুন করে অজু করতে হবে। অজু ভঙ্গের সাতটি কারণের মধ্যে হাটুর উপর কাপড় উঠে যাওয়ার বিষয়টি নেই। এজন্য কোনো কারণে কারো হাটুর উপর কাপড়

উঠলে অজু ভাঙবে না। ঠিক তেমনি নারীদের ক্ষেত্রেও অজু করার পর মাথার কাপড় পড়ে গেলে অজু ভাঙবে না। তবে কেউ দেখলে (নন মাহরাম) গুনাহ হবে। তবে মনে রাখতে হবে সতর অর্থ ঢেকে রাখা। একজন পুরুষের জন্য সবসময়

নাভীর উপর থেকে হাটুর নীচ পর্যন্ত এবং একজন নারীর জন্য পুরো শরীর ঢেকে রাখা ফরজ, তাই এ বিষয়ে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *