সুন্দরবনের জেলের বিচ্ছিন্ন মাথা, পাশে বাঘের পায়ের ছাপ

সুন্দরবন থেকে শিপার হাওলাদার (২২) নামে এক জেলের বিচ্ছিন্ন মাথা ও রক্তমাখা প্যান্ট উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছেন। রবিবার (১ অক্টোবর) সকাল ৮টার দিকে স্থানীয় লোকজন তল্লাশি চালিয়ে পূর্ব সুন্দরবনের ধানসাগর স্টেশনের তুলাতলা বন থেকে ওই জেলের মাথা ও প্যান্ট উদ্ধার করে। তাদের ধারণা, বাঘের আক্রমণের শিকার হয়েছেন শিপার হাওলাদার। বাঘ তার রক্ত খেয়ে মাথা ফেলে রেখে চলে গেছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. কামাল হোসেন তালুকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। গত বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বনে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হন শিপার। ঘটনার পাঁচ দিন পর তার বিচ্ছন্ন মাথা উদ্ধার করা হয়।

নিহত জেলে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের জেলে ফারুক হাওলাদারের ছেলে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. কামাল হোসেন তালুকদার জানান, গত বুধবার সকালে শিপার একাই বনে মাছ ধরতে যান। কিন্তু সারা দিন পেরিয়ে গেলেও ফিরে না আসায় উৎকণ্ঠায় পড়েন পরিবারের লোকজন। প্রথমে তারা নিজেরা বনে তল্লাশি শুরু করেন। কিন্তু না পেয়ে সর্বশেষ আজ সকালে পরিবারের লোকজনসহ অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী লাঠিসোঁটা নিয়ে বনে তল্লাশি শুরু চালায়। পরে সকাল ৮টার দিকে গহিন বনের তুলাতলা নামক স্থান থেকে শিপারের মাথা ও রক্তমাখা ক্ষতবিক্ষত প্যান্ট পাওয়া যায়। তার পিতা ফারুক হাওলাদার এর আগে বন বিভাগের ধানসাগর ষ্টেশন অফিস থেকে অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনের পৃথক স্থানে মাছ ধরতে যায়।

ইউপি সদস্য কামাল তালুকদার আরো জানান, ঘটনাস্থল এবং আশপাশে বাঘের পায়ের অসংখ্য ছাপ দেখতে পেয়েছেন উদ্ধারকারীরা। এ থেকে সবার ধারণা, তাকে বাঘে খেয়ে ফেলেছে। মাথাটি বাড়িতে নিয়ে আসার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। মাথাটি দাফনের প্রস্তুতি চলছে। ঘটনা শোনার পর স্থানীয় লোকজন ও জেলেদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

পূর্ব সুন্দরবনের ধানসাগর স্টেশনের কর্মকর্তা (এসও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আমার স্টেশনের তুলাতলা বন থেকে শিপার নামে এক যুবকের মাথা উদ্ধারের খবর শুনেছি। ধারণা করা হচ্ছে বাঘের আক্রমণে তার মৃত্যু হয়েছে। ওই যুবক অবৈধভাবে বনে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

এসও রবিউল ইসলাম জানান, ঘটনার পর থেকে বনসংলগ্ন এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন বা কোনো জেলে যাতে অবৈধভাবে বনে প্রবেশ না করে সে ব্যাপারে বনবিভাগ থেকে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।

ভোলা নদী মরে যাওয়ার কারণে রাতে পালিয়ে এলাকাবাসীর অনেকে সুন্দরবনে প্রবেশ করে থাকে বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *