সাড়া দিচ্ছে না চন্দ্রযান-৩

পৃথিবীর ডাকে সাড়া দিচ্ছে না চন্দ্রযান-৩। চাঁদের মাটিতে কাজ শেষ করার পর ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল চন্দ্রযান-৩ অভিযানের অবতরণ যান বিক্রম এবং অভিযাত্রী যান প্রজ্ঞানকে। কথা ছিল, চাঁদে যখন আবার সূর্য উঠবে, তখন তাদের ঘুম ভাঙানোর চেষ্টা করা হবে। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তাদের স্লিপিং মোড থেকে সক্রিয় করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু শুক্রবার ইসরোর সেই চেষ্টা সফল হয়নি।

ইসরো জানিয়েছে, বিক্রম বা প্রজ্ঞানের কাছ থেকে কোনো সিগন্যালই পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়নি। তবে একই সঙ্গে ইসরো এও জানিয়েছে যে, সাড়া না পেলেও এখনই হাল ছাড়তে নারাজ তারা। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৮ মিনিটে সামাজিক মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এ ব্যাপারে একটি পোস্ট করেছে ইসরো।

ওই পোস্টে লেখা হয়েছে, চন্দ্রযান-৩ অভিযানের খবর: বিক্রম ল্যান্ডার এবং প্রজ্ঞান রোভারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এখনো পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে কোনো সিগন্যাল এসে পৌঁছায়নি। তবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলমান থাকবে

চাঁদের মাটিতে ঘুরে তথ্য সংগ্রহকারী প্রজ্ঞানকে গত ২ সেপ্টেম্বর ঘুম পাড়িয়েছিল ইসরো। অন্যদিকে, চাঁদে অবতরণের পর প্রজ্ঞানের মতো ঘুরে বেড়াতে না পারলেও বিক্রম এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকেই একের পর এক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে। চাঁদে নিজের কাজ সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্নও করেছে। বিক্রমকেও গত ৪ সেপ্টেম্বর নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছিল ইসরো।

চাঁদের আকাশে ওঠা সূর্যের আলো থেকে শক্তি নিয়েই কাজ করছিল প্রজ্ঞান এবং বিক্রম। কিন্তু চাঁদের দিন আর রাত হয় ১৪ দিন ধরে। অর্থাৎ পৃথিবীর হিসেবে ১৪ দিন টানা দিনের আলো থাকে চাঁদে। তারপর টানা ১৪ দিন রাত। ইসরো তাদের কাজ সেভাবেই পরিকল্পনা করেছিল যেন চাঁদের আকাশে সূর্য থাকতে থাকতেই বিক্রম আর প্রজ্ঞান নিজেদের কাজ শেষ করতে পারে।

বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা ছিল, চাঁদে একবার রাত নামলে তাপমাত্রা অনেকটাই কমে যাবে। সে সময় প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় বিকল হয়ে যেতে পারে বিক্রম এবং প্রজ্ঞানের যন্ত্রাংশ। সেই আশঙ্কা থেকেই তাদের ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়। তবে কী এখন সেই আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে?

ইসরোর পক্ষ থেকে এখনি এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তারা শুধু জানিয়েছে, তারা যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিক্রম আর প্রজ্ঞানের সাড়া না পেলেও আপাতত হাল ছাড়ছে না তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *