সংলাপের রাজনীতিতে আবার নতুন হাওয়া.

দ্বাদশ জাতীয় ‘সংসদ নির্বাচ’ন ঘিরে দেশ ‘গভীর রাজনৈতিক সংকটে পড়েছে। ,নির্বা’চনকালীন সরকা’রের প্রশ্নে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অন’ড় অবস্থানের কা’রণে সংঘাতের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ’ অবস্থায় সংলা’পেই সমাধান দেখছে পশ্চিমা দেশগুলো।

বিশেষ করে যু’ক্তরাষ্ট্রের তাগিদে ‘এবার আলো’চনায় উঠে এসেছে সংলাপ।আ’.লীগ সংলাপে ‘রাজি, তবে হতে হবে শর্তহীন
দ্বাদশ জাতীয় সংস’দ নির্বাচন ঘিরে চলমান’ রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সংলাপে রাজি ‘আছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।

তবে এ সংলাপ হ:’তে হবে শর্তহীন। দলটির’ নেতারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও’ তত্ত্বাবধায়ক ‘সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি ‘থেকে বিএনপি সরে এ’লেই তাদের সঙ্গে ‘সংলাপ হতে পা’রে। সংলাপে’র মাধ্যমে সং:কট সমাধানে:র চাপ আছে সরকারের ওপর।

বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থে’কে এ চাপ বে’শ স্পষ্ট। এ নিয়ে গতকাল রো’ববার সচিবালয়ে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবা’য়দুল কাদেরে’র কাছে সাংবা’দিকেরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন’, বিএনপি তাদের’ শর্ত প্রত্যাহার করে নিলে সংলাপের বিষয়ে’ চিন্তাভাবনা করা হবে।

শর্তমুক্তভাবে ‘বিএনপি সংলাপ কর’তে চাইলে ‘আওয়ামী লীগ সংলাপে বসবে কি না’ এ প্রশ্নের জবাবে ও’বায়দুল কাদের বলেন, তখন চিন্তা করে ‘দেখা হবে। চল”তি মাসের ৮ থেকে ১২ তারি’খ ঢাকা ‘সফর করেছে যুক্ত”রাষ্ট্রের থিংকট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলি’কান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল

ডেমোক্রেটিক ই’নস্টি’টিউটের (এন’ডিআই) একটি যৌথ প্রতিনিধিদল। সফর’কালে তাঁরা আ’ওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, সুশীল স’মাজ, ‘নির্বাচন কমিশনসহ সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে ‘আলাদা বৈঠ’ক করেন। প্রতিনিধিদলটি যুক্তরাষ্ট্র ফিরে পাঁচটি মতামত ‘তুলে ধরেছে, যা’র একটি হলো অংশগ্রহণমূলক ‘নির্বাচনের লক্ষ্যে

বাংলাদেশের ‘রাজনৈতিক দলগুলোর’ মধ্যে অর্থ’বহ সংলাপ করা। পাশাপাশি রাজনীতি’র ক্ষেত্রে ম’ধ্যপন্থা অবলম্বন, নির্বাচনের সময় মতপ্রকাশের স্বা’ধীনতা রক্ষা এবং সব’ নাগরিকের ভিন্নমতকে সম্মান জা’নাতেও বলেছে প্র’তিনিধিদলটি।

পশ্চিমাদের এ’সব পরামর্শের ‘কারণে আ’ওয়ামী লীগ সংলাপের প্রশ্নে আগের চেয়ে’ নমনীয় হয়ে’ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকে’রা। তবে দুই দ’ল পর’স্পরের প্রতি আস্থাশীল হতে না পা’রলে কো’নো সংলাপই ফ’লপ্রসূ হবে না বলে জানি’য়েছেন আওয়ামী’ লীগের সভাপ’তিমণ্ডলীর এক সদস্য।

জানতে চাইলে দলটির ‘সভাপতিমণ্ডলীর ‘সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ আজকের প’ত্রিকাকে বলেন, ‘’সংলাপ হতেই: পারে, তবে কোনো শর্ত দিয়ে নয়। শর্তযুক্ত সংলা’পে কো’নো ফল হবে না।

খোলামন নিয়ে’ আসতে হবে। আম’রা খোলা মনে যাব, যাঁরা সংলাপ চান’ তাঁদেরও খোলা ‘মনে আসতে হবে’। আলোচনা তখন করব। রা’জনৈতিক দলগু’লোর মধ্যে গণতন্ত্রের জন্য আলো’চনা হতেই পারে।’

বাংলাদেশের নি’র্বাচনী রাজনীতির ই’তিহাসে সংলা:প প্রচলিত শব্দ। ২০১৪ সালে’র নির্বাচনের আ’গে জাতিসংঘের বিশেষ দূত অস্কার ফার্না’ন্দেজ তারনকোর নেতৃ’ত্বে আওয়ামী’ লীগ ও বিএনপির নেতাদের’ সঙ্গে সংলাপ হয়েছিল।

তাতে কোনো’ সমাধান হয়নি। শেষ পর্যন্ত ‘বিএনপি দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ’ নেয়নি। অন্যদিকে ‘একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন জাতী’য় ঐক্য ফ্রন্টসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ‘সংলাপ করে আওয়ামী লীগ।

সংলাপের কারণে’ তফসিল ঘোষণা’র পরে ভো’টের তারিখ ঠিক রেখে মনোনয়ন’ দাখিলের সময়ও’ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। কিন্তু ভোটের পর ‘বিএনপি অভি’যোগ করে, আওয়ামী’ লীগ তাদের সঙ্গে দেওয়া কথা রাখেনি।

শর্ত দেওয়ার ‘ক্ষমতা সরকারএখ’ন রাখে না: বিএনপি
অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞ’তা বিবেচনায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে বসা’র অনীহা ‘রয়েছে বিএনপির।’ এরপরও বিরাজমান

সংকট নিরসনে বৃহত্তর স্বা’র্থে সংলাপে বস’তে আপত্তি নেই তাদের। তবে ‘সেই সংলাপ ‘শর্তযুক্ত না শর্তহীন হবে, তা নির্ধারণ করার ক্ষমতা সরকার এ’খন রাখে না ব’লে মনে করছে দলটি।

সংলাপ নিয়ে দুই ‘পক্ষের কথা-চা’লাচালির মধ্যে গতকাল রোববার স’চিবালয়ে আওয়ামী লী’গের সাধারণ’ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘‘শ’র্তহীন সংলাপ ‘করতে চাইলে তাতে আ’ওয়ামী লীগ রাজি হ’তে পারে।’ এর আগে ‘সংলাপের পথ বিএনপি ব’ন্ধ করেছে’ বলে মন্তব্য করেন কাদের।

কাদেরের এসব মন্ত’ব্যের বিষয়ে জান’তে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক ‘সদস্য গতকাল ‘আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাঁর (ওবায়দুল কা’দের) কথার কোনো’ মূল্য’ আছে নাকি? তিনি সকালে এক কথা বলে’ন, আবার বিকেলে আরেক কথা বলেন।

আগে সংলাপের’ বিষয়ে অবস্থান প’রিষ্কার করুক, আলোচনার বিষয় ঠিক করুক, পরিবেশ ‘তৈরি হোক। তারপর এ ব্যাপারে ভাবা যাবে।’

তবে সংলাপ নি’য়ে ক্ষমতাসীনদের সা’ম্প্রতিক বক্তব্যকে খানিকটা নমনীয়তা বলেও মনে কর’ছেন বিএনপির নে’তাদের অনেকে। তবে এ নমনীয়তা’ যথেষ্ট নয় মত দিয়ে’ তাঁরা বলছেন, বিদেশি শক্তি ও আন্দোলনের চাপে সর’কার এখন’ নমনীয় হয়েছে এবং বাধ্য হয়েই সংলা’পের কথা বলছে।

সেদিক থেকে বিএ’নপি একটু সু’বিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। এ অবস্থায় আগ বাড়িয়ে সং’লাপের জন্য আপাতত ‘কোনো ছাড় দেওয়ার’ চিন্তা করছে না বিএনপি।

আওয়ামী লীগে’র অধীনে বিএনপির’ নির্বাচনে অংশ নেওয়াকে আত্মহত্যার ‘শামিল বলে মনে ‘করছেন বিএনপির নেতারা। তাই ক্ষমতা ছাড়ার আগে তাদে’র সঙ্গে সংলাপ ক’রাকে অর্থহীন বলেও মনে’ করছেন তাঁদের অনেকে।

বিএনপির ভা’ইস চেয়ারম্যান শামসু’জ্জামান দুদু গতকাল রোববার আজকের পত্রিকাকে বলেন’, ‘সরকার বাধ্য হয়ে’ সংলাপের কথা বলছে। কিন্তু’ সেই সংলাপ শর্তযুক্ত না শর্তহীন হবে,

তা নির্ধারণ করার ক্ষ’মতা সরকার এখ’ন রাখে না।’ তবে তিনি এও বলে’ছেন, ‘রাজনীতি’ চল’মান এবং আগামীতে আমাদের কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে হবে, সেটাও এখনো নির্ধারিত নয়।’

দলগু’লোর মধ্যে’ খোলামনে সংলাপ দরকার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নি’র্বাচন বি’শ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক উপায়ে সম্পন্ন ‘করতে রাজনৈতি’ক দলগুলোর মধ্যে খোলামনে অর্থবহ সং’লাপের তাগিদ ‘দিয়েছে ঢাকা ঘু’রে যাওয়া মার্কিন প্রাক্‌-নির্বাচন ‘পর্যবেক্ষণ দল।

ওয়াশিংটন ‘ডিসি থেকে ন্যাশনা’ল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) ও ই’ন্টারন্যাশনাল রি’পাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) গতকা’ল রোববার এক’ বিবৃতিতে এ তাগিদ দেয়।

নির্বাচনের’ অংশীজনদের বিবে’চনার জন্য এনডিআই-আইআরআই দলটি বিবৃতি’তে পাঁচ দফা সুপারিশস’হ একটি রূপরেখা প্রস্তাব করে। ‘সংলাপ ছাড়াও এতে অন্তর্ভু’ক্ত অন্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক ‘দলগুলোকে বক্তব্য দে’ওয়ার ক্ষেত্রে সংযমী হতে হবে। ম’তপ্রকাশের ‘স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে।

নাগরিক’দের জন্য খোলামে’লা পরিবেশ ‘নিশ্চিত করতে হবে। ভিন্নমতকে সম্মান’ দিতে হবে। রাজ’নৈতিক সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের জবাব’দিহি নি’শ্চিত করতে হবে’। সব দলের জন্য অর্থবহ রাজনৈতি’ক প্রতিযোগিতায়-

অংশ’ নেওয়ার পরিবেশ’ তৈরি করতে হবে। স্বাধীন নির্বাচন পরিচালনাব্য’বস্থাকে মজবুত কর’তে হবে। অ’ন্তর্ভুক্তিমূলক ও সক্রিয় নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ‘নাগরিকদের অংশগ্রহণে’র সংস্কৃতি তৈরির আগ্রহ জাগাতে হবে।

এনডিআই ও আইআরআই’য়ের পাঠানো ছ’য় সদস্যের প্রাক্‌-নির্বাচন পর্যবেক্ষণ’ দলটি ৭ ‘অক্টোবর থে’কে ছয় দিন ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কয়েকজন ম’ন্ত্রী, নির্বাচন কমিশন,

আওয়ামী ‘লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন’ রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, বিদেশি কূটনীতিকসহ অনেকের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠ’কের পর এ ‘রূপরেখাটি প্রকাশ করে।

মার্কিন মি’শনটি বলছে’, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ‘অনেক অগ্রগতি আছে। কি’ন্তু এখানকার রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও দলগুলো’র মধ্যে ক্রমহ্রা’সমান আস্থা ২০৪১ সাল নাগাদ ‘উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত’ হওয়া ও টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় রকম প্রতিবন্ধ’কতা। দলগুলোর ‘আপসহীন মানসিকতা,

ভোটে জি’তে নিজেরাই ‘সবকিছু গ্রাস করার মনোভাব, আক্রমণা’ত্মক বক্তৃতা, রাজনৈ’তিক সহিংসতা, ভয়ের পরিবেশ, নাগরিক ‘সমাজের মতপ্রকাশের সু’যোগ সংকুচিত হওয়া, দলগুলোর মধ্যে আস্থার’ ঘাটতি এমন বিরূপ ‘রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করেছে।

বিবৃতি’তে বলা হয়, তুল’নামূলকভাবে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক সংগঠনকে’ নিবন্ধন না দিয়ে অ’চেনা সংগঠনকে নিবন্ধিত করে নির্বাচন কমিশ’ন নিজের নিরপেক্ষতা’কে প্রশ্নের মুখোমুখি করেছে। কাগজ-কলমে নি’র্বাচন কমিশনের ক্ষমতা’ থাকলেও তা কার্যকরভাবে ভোটের দিন নির’পেক্ষভাবে প্রয়োগ ক’রার ক্ষেত্রে বেশ জটিলতা আছে।

এমন বিরূপ পরি’বেশ তৈরি হওয়ার’ পরিণতিতে নাগরিকেরা রাজনৈতিক প্রক্রি’য়ার ওপর আস্থা’ হারিয়ে ফেলছে। তাঁদের রাজনৈতিক ‘পছন্দের অধিকা’র থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এমন অবস্থায় রাজনৈতিক ‘সংলাপ না হলে উ’দ্বেগ-উত্তেজনা বাড়তে পারে। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও আছে।

মার্কিন সু’পারিশ গুরুত্ব’পূর্ণ নয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মার্কিন প্রাক্‌’-নির্বাচন প’র্যবেক্ষক দলের সুপারিশগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বলে ম’নে করে না স’রকার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন গতকাল এ মন্তব্য করেছেন’। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদে’র প্রশ্নের ‘জবাবে মন্ত্রী বলেন,

তারা একটি ফর’মাশি বিবৃতি দিয়েছে। ‘সুপারিশগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। অ’নেকেই ‘অনেক ধরনের মত দেয়। কিন্তু এগুলো গ্রহণ কর’বে কি করবে না, সেটা সরকা’রের বিষয়।

মোমেন ব’লেন, বিভিন্ন দেশে’র অনেক কূট’নৈতিক এসে দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলা’প করে। নির্বাচন নিয়ে অনেকে কথা বলে মজা পায়।’ এটা নিয়ে সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *