ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় ৭১ হলের যমুনা ভবন থেকে লাফ দিয়ে জিয়াউর রহমান হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই শিক্ষার্থীর টেবিল থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে।
চিরকুটটির উপরের অংশে লেখা ছিল, ‘মানুষ বাঁচে তার সম্মানে। আজ মানুষের সামনে আমার যেহেতু সম্মান নাই। আমার মৃত্যুর দায়ভার একান্ত আমার। সরি মা! বাড়ি থেকে দিয়ে আসা কথা রাখতে পারলাম না। আমার জীবন নিয়ে হতাশ।’
ওই চিরকুটের নিচের অংশে লেখা ছিল, ‘আমার কার্ডে কিছু টাকা আছে। বন্ধুদের কাছে অনুরোধ রইলো মায়ের হাতে দিতে। কার্ডের পাসওয়ার্ড….। ফোনের লক খুলে দিয়ে গেলাম। আমার লাশের পোস্টমোর্টেম না করে যেন বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কোনোরূপ আইনি ঝামেলায় কাউকে যেন জড়ানো না হয়। সবাই বাঁচুক। শুধু শুধু পৃথিবীর অক্সিজেন আর নষ্ট করতে চাই না।’
নিহত কাজী ফিরোজ (২০১৯-২০) শিক্ষাবর্ষের চীনা ভাষার শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়াউর রহমান হলের ২০৩ নম্বর কক্ষে থাকতেন। ফিরোজের রুমমেট বিন ইয়ামিন বলেন, ‘ফিরোজ কিছুদিন ধরে হতাশ ছিল। আমরা সবসময় তাকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করেছি। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সে কক্ষে এসে নামাজ পড়ে এবং জিজ্ঞেস করে, আমাদের কাছে টাকা পাওনা আছে কিনা। যখন সে ঘর থেকে বের হচ্ছিল, তখন তাকে বেশ বিষণ্ণ মনে হচ্ছিল। আমি তার ফিরে আসার পরে তার সঙ্গে কথা বলার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলাম। কিন্তু পাঁচ মিনিট পর শুনলাম বিজয় একাত্তর হল থেকে কেউ আত্মহত্যা করেছে।’
ইয়ামিন আরও বলেন, ‘আমরা তৎক্ষণাৎ সেখানে ছুটে যাই এবং দেখি ওই শিক্ষার্থী ফিরোজ। তখন ফিরোজকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
কাজী ফিরোজের মৃত্যু প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে ধারণা করা যাচ্ছে উল্লেখ করে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যতটুকু এভিডেন্স আমাদের কাছে আছে, তা হলো একটি সুইসাইড (আত্মহত্যা) নোট। সে যখন রুম থেকে বের হয়েছে, তার মোবাইলফোন, মানিব্যাগ ও সুইসাইড নোট রুমে রেখে গেছে।’