মাইকিং করে কুড়িয়ে পাওয়া টাকা ফেরত দিলেন কলেজছাত্র!

এক ঋণগ্রস্ত মহিলার টাকা কুড়িয়ে পান কলেজছাত্র কামরুজ্জামান। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টসহ মাইকিং করে টাকা ওই টাকার আসল মালিক খুঁজে বের করে ফেরত দেন কামরুজ্জামান। হারানো টাকা ফেরত পেয়ে অনকে খুশি হন বৃদ্ধা মসলিমা বেওয়া। এসময় তিনি বলেন, এই টাকাডা মোর অনেক কষ্টের টাকা ছিল। টাকা হারায় মুই পাগল হই গেছিনু। মোর টাকালা ফেরত পাম এইডা একবারও ভাবুনি। মোর খুব উপকার হইল টাকালা ফেরত পাহেনে।

আল্লাহ ছোয়াডার (কামরুজ্জামান) ভালো করবে। দোয়া করিম সবসময় ছোয়াডার তাহানে। আইজ মুই খুব খুশি।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে টাকাগুলো কুড়িয়ে পান কলেজছাত্র কামরুজ্জামান। পরে টাকার প্রকৃত মালিককে খুঁজতে মাইকিং বের করেন তিনি। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও টাকা কুড়িয়ে পাওয়ার বিষয়টি জানান দিয়ে মালিককে খোঁজা হচ্ছে মর্মে পোস্ট দেওয়া হয়। কামরুজ্জামান বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের চানপুকুর গ্রামের ফজলুর করিমের ছেলে। তিনি ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র।

কামরুজ্জামান বলেন, আমি যখন টাকা কুড়িয়ে পেয়েছিলাম, তখনই মনে হয়েছিল এটা কোনো গরিব, অসহায় ও ঋণগ্রস্ত মানুষের। এটা যদি আমি ফেরত না দিই তাহলে প্রকৃত টাকার মালিক অনেক কষ্ট পাবে। তাই বিডিও স্যানিটেশন ফার্মের পরিচালক ও সাংবাদিক হারুন অর রশিদের কাছে পরামর্শ করে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচার ও মাইকিং করি। পরে প্রকৃত মালিককে পেয়ে টাকা বুঝিয়ে দিতে পেরে আমার খুব আনন্দ হচ্ছে। আর আমার ধারণাটাও সঠিক ছিল। টাকার প্রকৃত মালিক সত্যিই ঋণগ্রস্ত ছিলেন। কামরুজ্জামানের সততার বিষয়টিকে সাধুবাদ জানিয়ে ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন বলেন, সে ছাত্র হিসেবে বেশ ভালো। তার এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশসংনীয়। যা ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছে।

আমরা তার জন্য দোয়া করছি। এমন মহৎ উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজে নৈতিক মানুষ তৈরি হওয়ার প্রভাব পড়বে বলে আমি আশা রাখছি৷ বিডিও স্যানিটেশন ফার্মের পরিচালক ও সাংবাদিক হারুন অর রশিদ বলেন, অনেকে এই কুড়িয়ে পাওয়া টাকার দাবি করেছিলেন। কিন্তু তাদের হিসাবে অনেক ভুল ছিল। যে টাকা বুঝিয়ে পেয়েছে, তার হিসাব একটু গরমিল থাকলেও অনেকটা সঠিক হয়েছে। আরও অপেক্ষা করতাম, কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী আশ্বাস দেন যে ওই টাকার প্রকৃত মালিক তিনি। পরবর্তীতে অন্য কেউ যদি উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে ওই টাকার দাবি করেন তাহলে মসলিমা বেওয়াকে আবার ডেকে নেওয়া হবে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, পৃথিবীতে ভালো মানুষ আছে বলেই পৃথিবী এতো সুন্দর। এটি আসলে অনেক প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কামরুজ্জামানের জন্য অনেক দোয়া রইলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *