ভারত-কানাডার সম্পর্কের টানাপোড়েন, একে অপরের কূটনীতিককে বহিষ্কার

গত জুন মাসে কানাডায় হরদীপ সিং নিজ্জর নামে এক খালিস্তানি নেতা হত্যার শিকার হন। সেই ঘটনার পরই খালিস্তানপন্থীরা অভিযোগ করে, ভারত এর সঙ্গে যুক্ত। এরই প্রেক্ষিতে সোমবার ভারতের এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করে কানাডা। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ভারতও কানাডার এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) কানাডার হাইকমিশনার ক্যামেরন ম্যাকায়কে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে বৈঠকের পর বেরিয়ে এসে মেজাজ হারাতে দেখা যায় তাকে।

বৈঠকে কী হয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে দুম করে নিজের গাড়ির দরজা বন্ধ করে দেন তিনি।

কানাডার অভিযোগ, গত জুন মাসে হরদীপ সিং নিজ্জর নামে ওই খালিস্তানি নেতাকে হত্যার ঘটনায় যুক্ত ছিলেন এক ভারতীয় কূটনীতিক। এই আবহে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে কানাডা থেকে।

https://x.com/ANI/status/1703997495318352108?s=20

এদিকে গণমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, কানাডার যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাছাড়াও কানাডার কূটনীতিকের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভারতে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছিল। কানাডার এক উচ্চপদস্থ কূটনীতিককে বহিষ্কার করার কথা তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়।

আগামী পাঁচদিনের মধ্যে সেই বহিষ্কৃত কূটনীতিককে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর জেরেই দিল্লির এই পদক্ষেপ বলে জানা গেছে। পাশাপাশি কানাডার কূটনীতিকদের সঙ্গে ভারতবিরোধী শক্তির যোগ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

এদিকে কানাডা থেকে ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করা এবং খালিস্তানি নেতা যোগের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বলেছে, “কানাডার সংসদে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বক্তব্য আমরা শুনেছি। কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যও আমরা শুনেছি।

আমরা এই সব অভিযোগই খণ্ডন করছি। কানাডায় কোনও সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে ভারত সরকারের যোগ থাকার অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। এর আগেও কানাডার প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তখনও আমরা তা খণ্ডন করেছিলাম।”

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “আমরা একটি গণতান্ত্রিক দেশ। আমরা আইনের শাসন মেনে চলি। এই ধরনের অপ্রমাণিত অভিযোগের মূল লক্ষ্যই হল খালিস্তানি সন্ত্রাসবাদী এবং

চরমপন্থীদের থেকে ফোকাস সরানো। এই জঙ্গিদের কানাডায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে এরা। এই বিষয়ে কানাডা সরকারের নিষ্ক্রিয়তা উদ্বেগের।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “কানাডার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা প্রকাশ্যে এই ধরনের বিচ্ছিনতাবাদীদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন, যা গভীর উদ্বেগের বিষয়। এমনিতেও কানাডায় খুন, মানবপাচার এবং সংগঠিত অপরাধসহ

বিভিন্ন ধরনের বেআইনি কার্যকলাপের জন্য যে জায়গা দেওয়া হয়েছে তা নতুন কিছু নয়। তাই এই ধরনের ঘটনার সাথে ভারত সরকারকে যুক্ত করার যেকোনও প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করছি আমরা।

বরং আমরা কানাডা সরকারের কাছে আবেদন জানাব, তারা যাতে তাদের মাটি থেকে পরিচালিত সমস্ত ভারতবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে দ্রুত এবং কার্যকর আইনি ব্যবস্থা নেয়।”

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *