বিমানের ফ্লাইটে দেওয়া খাবারে তে’লাপোকা

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে যাত্রীকে পরিবেশন করা খাবারে তেলাপোকা পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার ব্যাংকক থেকে ঢাকায় আসা বিমানের ফ্লাইটে (বিজি-৩৮৯) এ ঘটনা ঘটে।

বিমান সূত্রে জানা যায়, থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঢাকার উদ্দেশে ফ্লাইটটি ছেড়ে আসে। যাত্রা শুরুর পর ফ্লাইটে কমপ্লিমেন্টারি সার্ভিস হিসেবে যাত্রীদের খাবারের প্যাকেট সরবরাহ করা হয়। প্যাকেটে পোলাও ও মাংস ছিল। ২৬-সি নম্বর আসনে থাকা যাত্রী খাওয়ার একপর্যায়ে তাঁর খাবারে একটি সেদ্ধ তেলাপোকা পান। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি তিনি ক্যাবিন ক্রুদের জানালে তাঁরা দুঃখ প্রকাশ করেন এবং এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে যাত্রীকে আশ্বস্ত করেন।

ওই যাত্রী পরে ফ্লাইটেই লিখিত অভিযোগ করেন। তাতে বলেছেন, খাবারে সেদ্ধ ও মৃত অবস্থায় তেলাপোকা পাওয়ার পর তিনি আর খাবার খেতে পারেননি, তাঁর বমি আসে। তাৎক্ষণিকভাবে কেবিন ক্রুকে ডেকে ঘটনাটি জানান তিনি। পাশের আসনের যাত্রীও ঘটনাটি দেখেছেন। বিষয়টিকে খাবার সরবরাহ করা কর্তৃপক্ষের মারাত্মক অবহেলা হিসেবে দেখছেন ওই যাত্রী। তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে ঘটনাটি তদন্ত করে খাবার সরবরাহকারী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া এবং যাত্রীদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার সরবরাহের দাবি জানান।

বিমান সূত্র জানায়, ফ্লাইটে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো লিখে রাখার জন্য উড়োজাহাজে একটি ‘জার্নি লগ’ থাকে। এতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো লিখে রাখেন ফ্লাইট পার্সার। বিমানের ২৩ মের ব্যাংকক-ঢাকা ফ্লাইটের (বিজি-৩৮৯) জার্নি লগে ওই ফ্লাইটের পার্সার লেখেন, যাত্রীর ফয়েলে (ফয়েলের প্যাকেট) একটি ছোট আকারের তেলাপোকা পাওয়া যায়। এতে ওই যাত্রী খুবই হতাশ ছিলেন।

বিমানের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে খাবার সরবরাহ করা হয় বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টার (বিএফসিসি) থেকে। সাধারণত ঢাকা থেকে বিমানের কোনো ফ্লাইট অন্য কোনো গন্তব্যে যায় এবং সেখান থেকে আবার ঢাকায় ফিরে আসে, সে ক্ষেত্রে মোট যাত্রী সংখ্যা (আসা-যাওয়া) অনুযায়ী খাবার ফ্লাইটে তোলা হয়। প্রয়োজনে খাবার শুষ্ক বরফে সংরক্ষণ করা হয় এবং প্রয়োজনমতো ওভেনে গরম করে যাত্রীদের পরিবেশন করা হয়।

বিএফসিসির মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্বে আছেন ইকবাল আহমেদ আলী জা। খাবারে তেলাপোকা পাওয়ার ঘটনা সম্পর্কে জানতে তাঁকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ধরেননি। পরে এ বিষয়ে বিএফসিসির ব্যবস্থাপক (ফুড সেফটি অ্যান্ড হাইজিন) জাফর আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, খাবারে তেলাপোকা পাওয়ার মতো ঘটনা তিনি জানেন না। তাঁর দাবি, বিএফসিসিতে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাবার তৈরি করা হয়, এখানে তেলাপোকা থাকার কোনো সুযোগ নেই। তারপরও কোনো অভিযোগ এলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *