বিতর্কিত জলসীমায় ১৩৫ জাহাজ!

প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যেই দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত জলসীমায় অবস্থান নিয়েছে চীনের ১৩৫টি সামরিক জাহাজ। কোনোরকম জানান দেওয়া ছাড়াই

হঠাৎ এই জমায়েতকে ভালোভাবে নিচ্ছে না ফিলিপাইন। চীনা যুদ্ধজাহাজগুলোর এই অবস্থানকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছে ফিলিপাইনের কোস্টগার্ড।

আপাতত সম্মুখ বিরোধিতায় না গিয়ে চীনা জাহাজগুলোর উপস্থিতিতে দক্ষিণ চীন সাগরের হুইটসান রিফের আশপাশে সামরিক টহল বাড়িয়েছে ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ।

এক বিবৃতিতে ম্যানিলা বলেছে—পশ্চিম ফিলিপাইন সাগরে ফিলিপাইনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব, সার্বভৌম অধিকার ও এখতিয়ার রক্ষার ক্ষেত্রে সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং পরিবেশ রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কোস্ট গার্ড।

জুলিয়ান ফেলিপ রিফ বা প্রবাল প্রাচীর এলাকা নামে পরিচিত দক্ষিণ চীন সাগরের বিস্তৃত ২০০ নটিক্যাল মাইল অঞ্চলকে একচেটিয়াভাবে নিজেদের অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করে ম্যানিলা।

দেশের সঙ্গে মিল রেখে ম্যানিলা এই অঞ্চলটির নামও রেখেছে পশ্চিম ফিলিপাইন সাগর। তবে চীন তা কখনোই স্বীকার করে না।

আর তাই জুলিয়ান ফেলিপ রিফ অঞ্চলে নিজেদের ১৩৫টি যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতি নিয়ে ম্যানিলা যে বিবৃতি দিয়েছে, তা নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ফিলিপাইনের চীনা দূতাবাস।

দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সংবাদমাধ্যম স্টেটক্র্যাফটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাত্র কয়েকদিন আগে দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ বিমান ও সমুদ্র টহল

চালিয়েছে ফিলিপাইন। এর কয়েকদিনের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও একই রকম মহড়ার উদ্যোগ নিয়েছে ম্যানিলা। বিষয়টি মোটেও ভালোভাবে নেয়নি বেইজিং।

দক্ষিণ চীন সাগরের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে চীন ও ফিলিপাইনের মধ্যে। বিশেষ করে, জনবসতিহীন স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জ এবং স্কারবোরো শোলের মালিকানা নিয়ে দেশ দুটির এই দ্বন্দ্ব এখন চরমে।

কৌশলগতভাবে এই অঞ্চল দুই দেশের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধারণা করা হয়—ওই অঞ্চলে তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের বিপুল মজুত রয়েছে, যার বহুলাংশ এখনো

অনাবিষ্কৃত। অঞ্চলটি মাছ ধরার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ এবং বাণিজ্যিক জাহাজগুলো এই পথ দিয়েই চলাচল করে।

২০১৬ সালে এই অঞ্চলের ওপর চীনের দাবি খারিজ করে একটি আন্তর্জাতিক রায় দেওয়া হয়েছিল। তারপরও সেখানে প্রায়ই দেশটির উপস্থিতি দেখা যায়।

জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক ওই রায়টিকে ‘একটি কাগজের টুকরো ছাড়া আর কিছুই নয়’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছিল বেইজিং এবং এই অঞ্চলে আগ্রাসী উসকানি অব্যাহত রেখেছে।

ফিলিপাইনের অভিযোগ—তাদের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলে অবৈধভাবে মাছ ধরা এবং পরিবেশগতভাবে ক্ষতিকর কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণের পাশাপাশি সার্বভৌম অধিকার লঙ্ঘন করছে চীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *