বিজ্ঞান জাদুঘরে আস্ত দেয়াল ভেঙে ৫০ ফুট গভীর থেকে বিড়াল উদ্ধার

অজস্র পাখি ও নানা জীববৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ আগারগাঁওয়ের বিজ্ঞান জাদুঘর। সবুজে ঘেরা জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরটি এখন রাজধানীর বুকে অনন্য এক নান্দনিক স্থানে পরিণত হয়েছে। এ জাদুঘরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিত্য সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রচুর পাখপাখালি, কয়েকটি বিড়াল ও একটি কুকুর। নিয়মিত তাদের খাদ্যের সংস্থান করা হয়।

বিষয়টি কঠোরভাবে তদারক করেন জাদুঘরের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী।
গত ২১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) জাদুঘর ভবনের ছাদের একটি পাইপের গর্তে পড়ে যায় একটি বিড়াল। প্রায় তিন দিন বিড়ালটির ডাক কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। কিন্তু ৫০ ফুট গভীর পাইপের তলদেশ থেকে বিড়ালটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করে কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।

অতঃপর মহাপরিচালকের নির্দেশে পাইপটি ভেঙে ফেলা হয়। কিন্তু দেখা যায়, বিড়ালটি স্যুয়ারেজ পাইপের গর্তে আটকা পড়েছে। কোনোভাবেই বিড়ালটিকে বের করা সম্ভব হচ্ছিল না। সন্ধ্যা হয়ে রাতভর ভারী বর্ষণে জাদুঘর এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়।
যেকোনোভাবেই হোক, বিড়ালটিকে জীবিত উদ্ধারের জন্য নির্দেশ দেন মহাপরিচালক। অতঃপর প্রশাসনিক ভবনের আস্ত দেয়াল ভাঙা শুরু হয়।
বিশাল দেয়াল ভেঙে খননকাজ সম্পন্ন করে আট ঘণ্টার বিরামহীন অভিযানে বিড়ালটিকে করুণ অবস্থায় উদ্ধার করে আনা হয়। উদ্ধারের পর জাদুঘরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আনন্দের অশ্রু বয়ে যায়। অনেকে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।

এমন কিছু বিরল ঘটনা এর আগে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ঘটেছে, যেখানে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় এসব অসহায় প্রাণীকে উদ্ধার করা হয়। পশু-পাখির ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বিড়ালটি উদ্ধারে যে কর্তব্যনিষ্ঠা ও মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে, তার স্বীকৃতিস্বরূপ আজ বুধবার বিজ্ঞান জাদুঘরের সভাকক্ষে উদ্ধারকারী টিমের সকল সদস্যকে বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং প্রশংসাপত্র ও আর্থিক প্রণোদনা তুলে দেন মহাপরিচালক।

এ প্রসঙ্গে বিজ্ঞান জাদুঘরের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী বলেন, ‘শুধু সরকারি কর্তব্য পালনই আমাদের লক্ষ্য নয়, মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর এ সৃষ্টি জগতের যেকোনো প্রাণীর সুরক্ষা এবং বিপদে পাশে দাঁড়ানো মানুষ হিসেবে আমাদের নৈতিক কর্তব্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *