বিএনপির রোডমার্চে গেলে যশোরে ফিরতে পারবেন না

সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে মঙ্গলবার ঝিনাইদহ-যশোর হয়ে খুলনা অভিমুখী রোডমার্চ করবে বিএনপি। রোডমার্চ উপলক্ষে যশোর থেকে ব্যাপক নেতাকর্মী উপস্থিতির লক্ষ্য নিয়েছে জেলা বিএনপি। এই রোডমার্চে যশোর থেকে যেসব বিএনপি নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন তারা আর যশোরে ফিরতে পারবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ ও যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য সম্পাদক শাহীন চাকলাদার।

সোমবার সন্ধ্যায় শহরের চৌরাস্তা মোড়ে আওয়ামী লীগের ‘শান্তি সমাবেশে’ তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। বিএনপির আগুন সন্ত্রাসী জ্বালাও-পোড়াও ও পদযাত্রার বিরুদ্ধে এই শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে জেলা আওয়ামী লীগ। যশোরে বিএনপির রোডমার্চের আগের দিন সোমবার বিকেলে শান্তির সমাবেশের নামে নিজেদের শক্তির মহড়া দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। জেলার আটটি উপজেলার নেতাকর্মীদের নিয়ে এই শান্তি সমাবেশ হয়।

সমাবেশে যশোরের বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শাহীন চাকলাদার বলেন, ‘আগামী ২০৪১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে। ফলে যারা লন্ডন থেকে তারেকের কথা শুনে যশোরে বিশৃঙ্খলা করেন তারা বিপদে পড়বেন। আপনাদের নেতা রক্ষা করতে পারবে না। যারা বিএনপির নেতাদের কথা শুনে ঢাকার সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন, পদযাত্রা-রোডমার্চে অংশ নেবেন তাদের আর যশোরে ফিরতে দেওয়া হবে না। আপনাদের বাড়ির পাশে কিন্তু অনেক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর বসাবাস। তারা আপনাদের বাড়িঘর সব চেনে। পরবর্তীতে কী ঘটবে সেটা আর এখানে বললাম না!’

তিনি বলেন, ‘কালকের রোডমার্চে যশোরে যদি আগুন সন্ত্রাসী করেন; তাহলে খেলা হবে। তারেকের কথা শুনে যশোরে বিশৃঙ্খলা করলে বিপদে পড়বেন, মামলা খাবেন; মামলায় যদি না থামেন; তাহলে কিন্তু আমাদের কাছে মার খাবেন। যশোরের আট উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদককে নির্দেশ নিয়েছি; বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে খোঁজখবর রাখতে।’

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম লিটন, যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ডা. নাসির উদ্দিন, কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম মোড়ল, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সামির ইসলাম পিয়াস, ইঞ্জিনিয়ার আরশাদ পারভেজ, মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসান, ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাহমুদ, জেলা কৃষক লীগের সহ সভাপতি ইয়াকুব আলী, জেলা কৃষক লীগের সহ সভাপতি ইয়াকুব আলী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েল, যুবলীগনেতা ও পৌর কাউন্সিলর হাজী আলমগীর কবির সুমন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী। সমাবেশ পরিচালনা করেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহমুদ হাসান বিপু।

এ দিকে রাস্তা বন্ধ করে শান্তি সমাবেশ করাতে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন বলে জানা গেছে। বিকল্প সড়কগুলোতেও দেখা দেয় যানজট। শান্তি সমাবেশের মঞ্চ তৈরি করা হয় শহরের চৌরাস্তা মোড়ে। এতে শহরের কেন্দ্রস্থল দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

তবে কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শহরের চৌরাস্তাতে সমাবেশ করার অনুমতি নিয়েছিল জেলা আওয়ামী লীগ। শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আটকে সমাবেশ করলেও মানুষের ভোগান্তি হয়নি। ভোগান্তি কমাতে শহরের অন্যসব রাস্তাতে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন ছিলো। তারা অন্যসড়ক দিয়ে যানচলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *