ফেসবুকে পেজ খুলে বিক্রি ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’গেফতার

রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহরের পাশে ২৩ আগস্ট মিলেছিল নর্দান ইউনিভার্সিটির শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুনের (৩৬) লাশ। এ হত্যা মামলার তদন্তে নেমে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মাদক কারবারি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ জানায়, ওই যুবকরা ফেসবুকে ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ নামের পেজ খুলে নিষিদ্ধ মাদক বিক্রি করত।

শিক্ষক মামুনের মোবাইল ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে শনিবার রাতে চাঁদপুর থেকে আটক করা হয় শাকিল আহম্মদকে (৩০)। তার কাছ থেকে গ্রাহকদের নামের তালিকা ও লেনদেনের তথ্যসহ একটি খাতাও জব্দ করে পুলিশ। পরে ঢাকার টিকাটুলী থেকে রাকিবকে (৩২) আটক করা হয়। এ সময় জব্দ করা হয় ১০ গ্রাম স্কোপোলামিন, ২ লিটার পটাশিয়াম সায়ানাইড, ২ দশমিক ৫ লিটার ক্লোরোফর্ম, ৬টি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ। শাকিলের বাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানাধীন নারায়ণপুরে ও রাকিব বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানাধীন ইদিলকাঠির বাসিন্দা।

জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল গতকাল রোববার তাঁর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ২৩ আগস্ট পূর্বাচলের গোবিন্দপুর ২০ নম্বর সেক্টরে ঝোপের পাশে পাওয়া যায় মামুনের লাশ। তিনি ফেনী সদরের গজারিকান্দি এলাকার আবুল কালামের ছেলে। স্ত্রী মোরশেদা বেগমকে নিয়ে মামুন ঢাকার দক্ষিণখানের ভাড়া বাসায় থাকতেন।

এসপি গোলাম মোস্তফা বলেন, মামুন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে তদন্তে নামে জেলা ডিবি। তাঁর মোবাইল ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে শাকিলকে গ্রেপ্তারের পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য বেরিয়ে আসে। শাকিল ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ নামের একটি ফেসবুক পেজ পরিচালনা করে। এর মাধ্যমে অনলাইনে নিষিদ্ধ মাদক স্কোপোলামিন, সায়ানাইডসহ নানা ধরনের পণ্য বিক্রি করতে। রাকিব মাদক ও বিষ সরবরাহ করত।

তিনি বলেন, স্কোপোলামিন সেবন করলে যে কেউ সম্মোহিত হয়ে পড়েন। তিনি যে কোনো অপরাধ ঘটিয়ে ফেলতে পারেন। এক বছর ধরে চক্রটি এ মাদক বিক্রি করে আসছিল। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে চক্রের অন্যদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করবেন।

তবে শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন হত্যায় সরাসরি এই ব্যক্তিরাই জড়িত কিনা, বিষয়টি স্পষ্ট করেনি পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) চাইলাউ মারমা বলেন, এ চক্রের কাছ থেকে এই মাদক (স্কোপোলামিন) ও সায়ানাইড কিনেছিলেন শিক্ষক মামুন। তিনি কেন এসব কিনেছিলেন বা তাকে হত্যায় এ চক্র সরাসরি জড়িত কিনা, তা জানতে তদন্ত করছেন। তবে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে, যারা মাদক কিনেছেন, তারা আত্মহত্যা চেষ্টা করেছেন বা কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *