বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধ। যুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে সমর্থন দিয়েছেন বিশ্বনেতারা।
এমনকি এর প্রভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষোভ হয়েছে। ফলে বিভিন্ন দেশে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। খবর গলফ নিউজের।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যের অন্যতম শহর লন্ডনে উত্তাপ ছড়িয়েছে ফিলিস্তিন ইসরায়েল যুদ্ধ। ফলে শহরজুড়ে হামাসের হামলার ঘটনায় পুলিশ প্যাট্রোল বাড়ানো হয়েছে।
সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, আমরা বিভিন্ন ঘটনার ব্যাপারে সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। ফিলিস্তিনের গাজা সীমান্ত ও ইসরায়েলের ঘটনায় এ প্যাট্রোল বাড়ানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, ব্রিটেনের রাস্তায় ইহুদি বিরোধিতা বা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।
কানাডা
ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর কানাডার অন্টারিও প্রদেশে উল্লাস করেছে একদল যুবক। তারা হামাসের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়েছে। এ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, ফিলিস্তিন সমর্থকরা ট্রাক ও গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামে। এ সময় তারা হামাসের হামলার খবরে উল্লাসে ফেটে পড়ে। এর আগে কানাডার টরন্টোতেতেও ওড়ানো হয় ফিলিস্তিনের পতাকা।
এ ছাড়া কানাডার রাজধানী অটোয়ায় ধর্মীয়ভাবে সংবেদনশীল এলাকাগুলোতে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আজকে ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের হামলার প্রভাব আমাদের কমিউনিটিতেও রয়েছে। এ জন্য আমরা ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ ও উপাসনালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের উপস্থিতি বাড়িয়েছি।
ফ্রান্স
ইসরায়েলে হামলার ঘটনায় দেশটির চরম মিত্র ফ্রান্স তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা দেশটির বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে। দেশটির বিভিন্ন শহরের ইহুদি স্কুল ও উপাসনালয়ে নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গার্লাড ডার্মানিয়ান বিভিন্ন আঞ্চলিক অফিসে জরুরি নিরাপত্তা জোরদারের একটি ম্যাসেজ দিয়েছেন। এএফপির বরাতে ওই ম্যাসেজে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে যখন গাজা ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে তখন আমি ফ্রান্সের সকল ইহুদি কমিউনিটিতে সতর্কতা, নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা বাড়ানোর নির্দেশ দিচ্ছি। তিনি দেশটিতে ২০১৫ সালে গঠন করা সন্ত্রাস প্রতিরোধী ইউনিটকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
জার্মান
জার্মানের রাজধানী বার্লিনে ফিলিস্তিনের সমর্থনে উল্লাস করেছেন স্থানীয়রা। বার্লিনের একটি সড়কে তারা ফিলিস্তিনের সমর্থন জানিয়ে সড়কে মিছিল করেছেন। এ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন ইহুদি ও ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
জার্মানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফাইসার সংবাদপত্র বিল্ডকে বলেন, বার্লিনে জরুরিভাবে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়াতে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ফেডারেল ও আঞ্চলিক সরকার নিবিড়ভাবে এ বিষয়ে কাজ করছে।
ইরান
ইসরায়েলে ফিলিস্তিনিদের হামলার আকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে ইরান। এ ছাড়া রাজধানী তেহরানের ফিলিস্তিন স্কয়ারে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছেন কয়েকশ মানুষ। এ সময় তারা ফিলিস্তিনের পতাকা উঁচিয়ে ধরেন।
বিক্ষোভে তারা হামাসের সমর্থনে বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন প্রদর্শন করেন। এ ছাড়া তারা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছেসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় তারা ইসরায়েলের পতাকাতেও অগ্নিসংযোগ এবং মোটর র্যালিও করেন।
লেবানন
ফিলিস্তিনের এ যুদ্ধে নিবিড়ভাবে পাশে রয়েছে লেবানন। দেশটির সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ এ যুদ্ধে সমর্থন দিয়ে আসছে। তারা ইসরায়েলের মরণ হোক এমন স্লোগান দিয়ে রাজধানী বৈরুথে বিক্ষোভ করেন। ইসরায়েলের ফিলিস্তিনে হামলার জবাবে দেশটি পাল্টা হামলাও চালিয়েছে।
হিজবুল্লাহর সিনিয়র কর্মকর্তা হাসেম সাফিদ্দিন বলেন, ফিলিস্তিন তোমাদের সঙ্গে আমাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ রয়েছে। আমরা তোমাদের সঙ্গে রয়েছি।
তুরস্ক
ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে র্যালি করেছেন তুরস্কের হাজার হাজার মানুষ। তারা ইস্তাম্বুলে ফিলিস্তিনের সমর্থন জানিয়ে এ র্যালি করেন। এটির আয়োজকদের অন্যতম ৫৪ বছর বয়সী শাহিন ওকাল। তিনি জানান, ফিলিস্তিনের মানুষ কেবল তাদের মাতৃভূমি রক্ষার চেষ্টা করছেন। এটা কোনোভাবেই সন্ত্রাসী হামলা নয়।
ইয়েমেন
ইয়েমেনের রাজধানী সানায়ও ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিক্ষোভ পালিত হয়েছে। দেশটির নাগরিকরা সানায় জড়ো হয়ে এ বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকায় আগুন দেন। এ সময় তারা আমেরিকার মরণ হোক, ইসরায়েলের মরণ হোক এসব স্লোগান দেন।
ইরাক
ফিলিস্তিনের এ হামলায় সমর্থন দিয়েছে ইরাক। এর প্রতি সমর্থন জানিয়ে রোববার বিকেলে কারবালায় বিশাল বিক্ষোভ পালিত হয়েছে। এ ছাড়া শনিবার বাগদাদে অন্তত শতাধিক লোক ফিলিস্তিনের সমর্থন জানিয়ে ইসরায়েলের পাতাকায় আগুন দেন। এ সময় তারা ‘নো টু আমেরিকা , নো টু ইসরায়েল’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।