দেশব্যাপী ছাত্র সমাবেশের ঘোষণা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের

দেশব্যাপী ছাত্র সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। রোববার (১ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জোটের নেতারা এ ঘোষণা দেন।জোটের নেতারা জানান, আগামী ১৩ অক্টোবর চট্টগ্রাম, ১৫ অক্টোবর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ৪ নভেম্বর রংপুর, ৫ নভেম্বর বগুড়া, ৬ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১১ নভেম্বর বরিশাল, ১৭ নভেম্বর সিলেট, ১৮ নভেম্বর ময়মনসিংহ ও ২৪ নভেম্বর ঢাকায় কেন্দ্রীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের আহ্বায়ক সাদেকুল ইসলাম সোহেল বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। দেশের জনগণ হিসেবে আমরা দুঃসহ সময় পার করছি। আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসনের কবলে দেশ। রাতের অন্ধকারে ভোট কাটার মধ্য দিয়ে জোরপূর্বক ক্ষমতায় আসা একটি ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী সরকার দীর্ঘদিন ধরে জনগণের কাঁধে চেপে আছে। আবারও তারা একই পথ অবলম্বন করে দেশি-বিদেশি মদদে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছে। যার ফলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যবাদী শক্তিগুলোর হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, এই সরকার টিকেই আছে আমলাতন্ত্র, পুলিশ, র‍্যাব এবং তার গুন্ডা বাহিনী নিয়ে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে গিয়ে রাষ্ট্রের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। উন্নয়নের নামে একদিকে বৈদেশিক ঋণ যেমন বাড়ছে, অন্যদিকে সেই অর্থের একটা বড় অংশ আবার লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। এসবের প্রতিবাদ করলে বিরোধী শক্তিদের ওপর নেমে আসছে ভয়ংকর বিভীষিকা। গুম, খুন, হামলা, মামলায় জনজীবন অতিষ্ঠ। দেশের শিক্ষার পরিস্থিতি আরও খারাপ। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা বহুভাগে বিভক্ত। মানসম্মত সর্বজনীন, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাবস্থা নিশ্চিত করতে পারছে না। শিক্ষার বেসরকারিকরণ, বাণিজ্যিকীকরণ ও শিক্ষা সংকোচন নীতি বেপরোয়া গতিতে এগিয়ে নিচ্ছে সরকার। ছাত্র, শিক্ষক এবং শিক্ষাসংশ্লিষ্টদের কোনো মতামত না নিয়েই সরকার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।তিনি আরও বলেন, এ রকম পরিস্থিতিতে ছাত্রসমাজসহ সর্বস্তরের জনগণ ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন থেকে মুক্তি চাইছে। বর্তমান ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের ভয়াবহতাকে রুখতে সর্বস্তরের মানুষের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম প্রয়োজন। আমরা গণতান্ত্রিক ছাত্র ছোট ছাত্র-শিক্ষক-শ্রমিক কৃষকসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানাই এ সময় তারা ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন। তাদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ এবং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে; সর্বজনীন, বৈষম্যহীন, বিজ্ঞানভিত্তিক, গণতান্ত্রিক এবং একই ধারার শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে হবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম- ২০২১ বাতিল করতে হবে; কাগজ-কলমসহ শিক্ষা উপকরণ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমাতে হবে; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস-দখলদারত্ব বন্ধ করতে হবে।অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিতে হবে; সাইবার নিরাপত্তা আইন ও অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল- ২০২৩ বাতিল করতে হবে। শ্রমিকদের অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার দিতে; রাষ্ট্রীয়ভাবে গুম খুন-নির্যাতন ও বিনা বিচারে মানুষ হত্যা বন্ধ করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা শাসন বন্ধ কর ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে হবে।এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি ছায়েদুল হক নিশান, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রণি, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের দপ্তর সম্পাদক এহতেসাম ইমন, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সভাপতি তাওফিকা প্রিয়া, বৃহত্তর পার্বত্য পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *