দিল্লিতে হাসিনা-বাইডেন সাক্ষাতে কী আলাপ হয়েছিল জানাল যুক্তরাষ্ট্র

সম্প্রতি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সাক্ষাতে কী আলাপ হয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল দেশ ও আন্তর্জাতিক মহলে। এবার এ বিষয়ে কথা বলেছে হোয়াইট হাউস

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগত যোগাযোগবিষয়ক সমন্বয়কারী জন কিরবি সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।

জন কিরবিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্করের সঙ্গে জ্যাক সুলিভানের বৈঠক সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। একই সঙ্গে গত মাসে নয়াদিল্লিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাতের বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়।

জবাবে জন কিরবি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের গুরুত্বের বিষয়ে কথা বলেছেন। একই সঙ্গে তাঁরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলাসহ বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে কথা বলেছেন।’

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যা চায়, যুক্তরাষ্ট্রও তা চায়। বাংলাদেশের কোনো বিশেষ দলকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না। যুক্তরাষ্ট্র আগামী জাতীয় নির্বাচনের ফল প্রভাবিত করতে চায় না। যুক্তরাষ্ট্র শুধু চায় বাংলাদেশের জনগণ যেন স্বাধীনভাবে তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে। স্থানীয় সময় গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ওপর সম্ভাব্য ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চান। এ নিয়ে মিলার বলেন, বাংলাদেশে তালেবানি ব্যবস্থা চালুর পক্ষে থাকা কট্টরপন্থি গোষ্ঠী ও বিরোধী নেতারা পিটারের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। এরই মধ্যে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি উগ্র মতাদর্শের সমালোচক সাংবাদিকদের তালিকাও প্রচার করা হচ্ছে। অন্যদিকে নাগরিক ও মানবাধিকারকর্মী, যুদ্ধাপরাধবিরোধী প্রচারকর্মী, সম্পাদক, সাংবাদিক, লেখক, সংখ্যালঘু নেতারা গণমাধ্যমের ওপর সম্ভাব্য ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার প্রতি অবমাননা হিসেবে দেখছেন। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কেন্দ্রে আছে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা।

এরপর ওই সাংবাদিক মিলারের কাছে জানতে চান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যকে সমর্থন করেন কি না? ধর্মনিরপেক্ষ জাতির সমর্থনকারী এত বড় উদারপন্থি গোষ্ঠীর উদ্বেগকে কি তিনি সরাসরি অস্বীকার করেন?

জবাবে মিলার বলেন, তিনি গত সপ্তাহে যা বলেছিলেন, তা একটু ভিন্ন ভাষায় আবারও বলতে চান। তা হলো বাংলাদেশিরা যা চায়, যুক্তরাষ্ট্রও তা-ই চায়। আর সেই চাওয়া হলো, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান। বাংলাদেশের সরকার, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যম সবাই এই ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেছে। তারা চায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে হোক। একই চাওয়া যুক্তরাষ্ট্রেরও। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার নীতি এই উদ্দেশ্যকে সমর্থন করে। বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনভাবে তাদের নেতা নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে। যুক্তরাষ্ট্র কোনো বিশেষ দলকে সমর্থন করে না। নির্বাচনের ফলকে প্রভাবিত করতে চায় না। বাংলাদেশের জনগণ যেন স্বাধীনভাবে তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *