চাঁদপুরে কবর দেওয়ার ২৮ বছর পর মিলল অক্ষত লাশ

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় ২৮ বছর আগে দাফন করা এক ব্যক্তির মরদেহ অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এমনকি মরদেহ এবং কাফনের কাপড়ও ছিল অক্ষত। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পুনরায় ওই মরদেহ দাফন করা হয়েছে।মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার ডেঙ্গুরভিটি গ্রামের ঘটনা এটি।

১৯৯৬ সালে ৭২ বছর বয়সে ডেঙ্গুরভিটি গ্রামের বাসিন্দা মো. সাহেব আলী খান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। পরে তাকে নিজ গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছিল।

মো. সাহেব আলী খানের ছেলে মো. মোবারক হোসেন খান বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে ইটালিতে বসবাস করে আসছি। আমাকে গ্রাম থেকে ফোন করে জানানো হয় আমার বাবার কবরের ওপর দিয়ে রাস্তা যাচ্ছে। আমি কয়েকবার স্বপ্নেও দেখেছি বাবা বলছে, আমার কবরের ওপর দিয়ে রাস্তা যাচ্ছে, তুমি আমার কবরটা এখান থেকে অন্য জায়গায় হস্তান্তর করো।

তিনি বলেন, এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমি আমার চাচা এবং গ্রামের লোকজনকে বলেছি, আমি দেশে আসলে যেন আমার বাবার কবরটা এখান থেকে হস্তান্তর করে। রোববার (১৭ আগস্ট) আমি ইটালি থেকে দেশে এসে হুজুরদের সাথে কথা বলে ধর্মীয় নিয়ম মেনে আত্মীয়স্বজন ও এলাকার লোকজন নিয়ে সকাল ১১টার দিকে প্রতিবেশীদের নিয়ে কবরের কাছে যাই। কবর খুঁড়তেই সাদা কাপড় দেখতে পাই আমরা। একপর্যায়ে অক্ষত মরদেহ দেখে ওই জায়গা থেকে উত্তোলন করে আমার মায়ের কবরের পাশে দাফন করি। ২৮ বছর পরও বাবার মরদেহ অক্ষত দেখে সবাই হতভম্ব হন।

এদিকে ২৮ বছরে মরদেহ কবরে অক্ষত থাকার খবর শুনে ওই বাড়িতে ভিড় জমান এলাকাবাসী। শুধু এলাকাবাসী নয়, দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে দেখতে আসেন মরদেহ।

মো. মোবারক হোসেন খান আরও বলেন, আমার বাবা সাধারণ মুসল্লি ছিলেন। অনেক পরহেজগার ছিলেন তিনি। মরদেহ কবর থেকে তোলার পর দেখি কাফনের কাপড়ও পচেনি। ধরে দেখি কাপড়ের ভেতরে শুকনো দেহ রয়েছে। প্রতিটি হাড়ের জোড়া শক্ত। হাত-পায়ের জোড়া বিচ্ছিন্ন হয়নি।

এ বিষয়ে ডেঙ্গুরভিটি গ্রামের আব্দুল গনি খান, মো. ফজলুল হক বকাউল ও ফয়সাল আহাম্মেদ বলেন, মো. সাহেব আলী খানের মরদেহ অলৌকিকভাবে ২৮ বছর পর অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ধর্মীয় রীতি মেনে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

ছেংগারচর বাজার আন-নুর ইসলামীয়া মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ কারি মাওলানা মাইনুদ্দিন খান বলেন, আল্লাহ নানাভাবে তার কুদরতের নিদর্শন দেখান। হয়তো এটি আল্লাহর একটি নিদর্শন। এমনও হতে পারে মো. সাহেব আলী খান আল্লাহর গ্রহণযোগ্য বান্দা ছিলেন। তাই অলৌকিকভাবে মরদেহ অক্ষত রয়েছে। এ ধরনের মরদেহের গোসল ও জানাজা দেয়ার প্রয়োজন নেই। ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী স্থানান্তর করে দাফন করে দিলেই হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *