গাজার নিচে অন্য এক জগৎ তৈরি করেছে হামাস

২০২১ সালে ইস’রায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী দাবি ‘করেছিল, তারা হামাসের ১০০ কিলোমিটা’র সুড়ঙ্গ নেটওয়া’র্ক ধ্বংস করে দিয়েছে। তবে এই দা’বির বিপরীতে হামাসে’র নেতা ইয়াহিয়া সিনবার জা’নিয়েছিলেন, গাজা শহরের মা’টির নিচে তাঁদের সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক ৫০’০ কিলোমিটার দীর্ঘ!

আর এর মাত্র ‘একটা অংশই ‘ধ্বংস করতে পেরেছে ইসরায়েল। গত ৭ অক্টোবর হা’মাসের আকস্মিক আক্রমণের জের ধরে’ টানা এক সপ্তাহ গাজা শহ’রের ওপর ৬ হাজারের বেশি’ বোমা ফেলেছে ইসরা’য়েল। এসব বোমা’র আঘাতে ১ হাজার ৫৩৭ ফিলিস্তিনি মা’রা গেছেন।

বিধ্বস্ত হয়েছে অসং’খ্য ভবন।নির্বিচার বোমা হা’মলার বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহলে’র সমালোচনার মুখে ইসরা’য়েল বলছে, এসব ভবনের নি’চ দিয়েই গড়ে উঠেছে হা’মাসের সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক।২০০৭ সালে ‘ গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্র’ণে নেওয়ার পর গত দেড় দশকে সু’দীর্ঘ এই নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে হামাস।

এসব সুড়ঙ্গ শহর ছা’ড়িয়ে ইসরায়েলের সীমান্ত প’র্যন্তও পৌঁছে গেছে। ধারণা করা ‘হচ্ছে, এই নেটওয়ার্ক ব্যব’হার করেই ইসরায়েলের ‘মাটিতে এযাবৎকালের সব’চেয়ে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে হামাস। গাজা শহরে’র মাটির নিচে হামাসে’র সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ককে ‘গাজা’ মেট্রো’ নাম দিয়েছে ইসরা’য়েল কর্তৃপক্ষ।

এর আগে প্রকা’শ্যে আসা বিভিন্ন ভিডিওতে’ দেখা গেছে, সুড়ঙ্গগুলো সাধারণ হামাগু’ড়ি দিয়ে চলার মতো নয়, বরং ‘যথেষ্ট প্রশস্ত। একজন মানুষ সুড়’ঙ্গের ভেতর দিয়ে কোনো’ বাধা ছাড়াই দৌড়াতে পারবে। সুড়ঙ্গগু’লোর ভেতরে পর্যাপ্ত আ’লোর ব্যবস্থা ছাড়াও রয়েছে গোলাবা’রুদ ও অস্ত্রশস্ত্র লুকিয়ে রাখার জন্য গোপন নানা স্থান।

সুড়ঙ্গের দেয়া’লগুলো কংক্রিট দিয়ে তৈরি এবং দে’খেই বোঝা যায় এগুলো বে’শ শক্তপোক্ত। ইস’রায়েলের অভিযোগ গাজার বাসিন্দাদের জন্য যেসব মানবি’ক সহযোগিতা পাঠানো হতো’ তার বিপুল অংশই খরচ হ’য়েছে হামাসের গো’পন অবকাঠামো নির্মাণের পেছনে।

গাজার সঙ্গে সীমা’ন্তজুড়ে অনেক শক্তিশালী ‘এবং ৩০ ফুট উঁচু বেড়া নির্মাণ করেছে ইসরায়েল। এসব বেড়ার সঙ্গে অত্যাধুনিক সেন্সরও যুক্ত আছে’। কিন্তু গত ৭ অক্টোবর রকেট ‘ছাড়াও হামাস যোদ্ধারা সশরীরে’ ইসরায়েলে প্রবেশ করে হাম’লা চালালেও সেন্সরগুলো কোনো সংকেত পাঠায়নি।

এ থেকে ধারণা ক’রা হচ্ছে, হামাস যোদ্ধাদের’ কেউ কেউ প্যারাগ্লাইডিং করে ইস’রায়েলের ভেতরে প্রবে’শ করলেও বেশির ভাগই সুড়ঙ্গ ‘পথ ব্যবহার করে সেখা’নে পৌঁছেছে। হামাসের সুড়ঙ্গের বিষয়ে রিচম্যান ‘ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি মেম্বা’র ড্যাফনি রিচমন্ড বারাক বিবি’সিকে বলেন,

‘এগুলোর ভেত’রে দীর্ঘ সময় ধরে অবস্থান করা’ কিংবা টিকে থাকার জন্য ব্যবস্থা রয়ে’ছে।’ড্যাফনি মনে ক’রেন, হামাসের নেতারা এসব সুড়ঙ্গে’র ভেতরেই অবস্থান করেন এবং’ সেখান থেকেই বিভিন্ন অভিযা’ন পরিচালনা ও নেতৃত্ব দেন। এক জা’য়গা থেকে অন্য জা’য়গায় সহজে যাতায়াত ছাড়াও ‘অস্ত্রশস্ত্র পরিবহনে এই সুড়ঙ্গগুলো বেশ ‘কার্যকর ভূমিকা রাখে।

হামাস যোদ্ধারা গাজার’ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার অনেক আ’গে থেকেই শহরের মাটির ‘নিচে অসংখ্য সুড়ঙ্গ ছিল। তবে সে’ সময় সুড়ঙ্গগুলো চোরাচালা’নের কাজে ব্যবহৃত হতো। হা’মাসের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর গাজা’র সঙ্গে যুক্ত অসংখ্য সুড়ঙ্গ’ পথ বন্ধ করে দেয় মিসর এবং চোরা’চালান বন্ধে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ’ করে।

এ অবস্থায় ‘সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচাল’না ও লুকিয়ে থাকতে শহরজুড়ে সুড়ঙ্গ ব্য’বস্থাকে আরও উন্নত করে হামাস। ইস’রায়েল দাবি করছে, হামা’সের সম্প্রতি হামলায় তাদে’র ১ হাজার ৩০০ নাগরিক নিহত হয়েছে। এ ছা:ড়া আরও প্রায় দেড় শ না’গরিককে বন্দী করেছে হা’মাস যোদ্ধারা।


বন্দী ইসরায়েলি’দের এসব সুড়ঙ্গের ভেতরেই লুকিয়ে রা’খা হয়েছে। তাই শহ’রের ভেতরে স্থল অভি’যানের প্রস্তুতি নিয়েছে ইসরায়েলের পদাতিক সে’নারা। সবুজ সংকে:ত পেলে শনিবার থেকেই এই অভি’যান শুরু হবে। গাজা শহরের মাটির’ নিচে গড়ে তোলা হামাসের সুড়ঙ্গ নেটও’য়ার্ক ভেঙে দেওয়াই স্থ’ল অভিযানের লক্ষ্য। তবে এই নে’টওয়ার্ক ধ্বংস করতে গিয়ে ই’সরায়েলি সেনারা বড় ধরনের ফাঁ’দে পড়তে পারে বলেও আশ’ঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *