কোরআন অবমাননায় কারাবন্দিকে পেটালেন রমজান কাদিরভের ছেলে

কোরআন অবমাননার বিরুদ্ধে সোচ্চার সারাবিশ্ব। এবার কোরআন অবমাননা করায় কারাবন্দিকে পিটিয়েছেন চেচেন নেতা রমজান কাদিরভের ছেলে আদম। এ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে জাতিসংঘের অধিবেশনে কোরআন হাতে নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। খবর রয়টার্স।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) চেচেনের এ নেতা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের একান্ত অনুগত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত রমজান কাদিরভ তার ছেলের মারধরের বিষয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, ছেলে কোরআন অবমাননাকারী কারবন্দিকে পেটানোয় তিনি অত্যন্ত গর্বিত।

এ ঘটনায় একটি ক্লিপ টেলিগ্রামে শেয়ার করেন কাদিরভ। সেখানে দেখা যায়, খাকি পোশাক পরা এক ব্যক্তি চেয়ারে বসা একজনকে লাথি এবং ঘুসি মারছেন। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি ফ্লোরে পড়ে যান। এর আগে তিনি তার মাথায় চড় মারেন।

চেচেন নেতা জানান, তিনি এ ভিডিওটি প্রকাশ করেছেন ঘটনার বিষয়ে সন্দেহ দূর করার জন্য। গত মাসে ঘটনাটি প্রথম আলোচনায় আসে। এরপর তিনি এ বিষয়টি স্পষ্ট করলেন।

কাদিরভ বলেন, সে তাকে মেরেছে এবং ঠিক কাজই করেছে। কোনো প্রকার অতিরঞ্জন ছাড়াই কাদিরভ বলেন, ‘আমি অদমের কর্মকাণ্ডে গর্বিত, তার আদর্শ, শ্রদ্ধাবোধ ও ধর্মের প্রতি অনুরক্তের শ্রদ্ধা জানায়।’

২০০৪ সালে পিতা আখমাদ কাদিরভের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসেন রমজান কাদিরভ। দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধে বিদ্রোহী চেচনিয়া প্রদেশটি পুনরুদ্ধার করার পর পুতিনের শাসনভার তুলে দেন তার অনুগত চেচেন নেতা আখমাদ কাদিরভের হাতে।

রাশিয়ান সামরিক বাহিনী এবং অন্যান্য নিরাপত্তা পরিষদের বিরোধিতা সত্ত্বেও চেচনিয়াকে প্রায় স্বায়ত্তশাসিতভাবে পরিচালনা করতে পুতিনের সম্পূর্ণ সমর্থন পেয়েছিলেন রমজান কাদিরভ। বিনিময়ে পুতিন চেয়েছিলেন কাদিরভকে এই অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে দমন করতে হবে।

চেচেন সরকারের বাজেটের প্রায় ৯-দশমাংশের জোগান দেয় রাশিয়া। বিশাল রাষ্ট্রীয় ভর্তুকির পাশাপাশি দেওয়া হয় পুরস্কার এবং প্রণোদনা। রাজধানী গ্রোজনিতে কাদিরভ এবং তার মিত্ররা সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন ভোগ করলেও, অনেক শক্তিশালী শত্রুও ছিল তার। ওয়াগনার গোষ্ঠী ছিল সেই শত্রুদের একজন।

ওয়াগনারের অনেক পেশাদার সৈন্য ছিলেন যারা চেচেন যুদ্ধে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। একসময় রমজান কাদিরভ নিজেও ছিলেন সেই বিদ্রোহীদের মধ্যে। তাই জাতিগতভাবে চেচেনদের জন্য ওয়াগনার বাহিনীতে যোগদান নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

ইউক্রেন যুদ্ধে প্রিগোজিন এবং রমজান কাদিরভের মধ্যে একটি মিল দেখা গেছে। তারা দুজনেই রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছেন। তারা দুজনেই রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে অযোগ্য বলে আক্রমণ করেছেন এবং এর মাধ্যমে তারা নিজেদের ভাড়াটে বাহিনীকে সামনে নিয়ে এসেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *