কুরুলুস উসমানের সিজন ৫ শুরু

উসমানীয় সাম্রাজ্যের উত্থানের সময়কার সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত জনপ্রিয় তুর্কি সিরিজ ‘দিরিলিস আর্তুগ্রুল’-এর সফলতার পরে নির্মিত হয় ‘কুরুলুস উসমান’ সিরিজ। চলতি বছরের জুনে শেষ হয় সিজন ৪। এরপর দীর্ঘ ৩ মাস অপেক্ষার প্রহর শেষে বুধবার (৪ অক্টোবর) প্রচারিত হয় সিজন ৫ এর প্রথম পর্ব (১৩১ ভলিউম)।

বিশ্বের ৭৩ দেশে প্রচারিত দর্শকনন্দিত সিরিজটি আন্তর্জাতিক ভেনিস টিভি অ্যাওয়ার্ড ২০২০-এ সেরা সিরিজ নির্বাচিত হয়েছে। ইতোমধ্যে সিরিজটির বাংলা ডাবিং নিয়ে কাজ করছে বেশ কয়েকটি মাধ্যম।

টিভি অনুষ্ঠানে ওসমানের অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক সংগ্রাম এবং তিনি কীভাবে উসমানীয় রাজত্ব প্রতিষ্ঠা ও নিয়ন্ত্রণ করেন তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি বাইজান্টাইন এবং মঙ্গোলদের বিরুদ্ধে তাঁর সংগ্রাম এবং কীভাবে তিনি বাইজেন্টাইন এবং মঙ্গোল সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে এবং তুর্কিদের সম্মান জানাতে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য রুমের স্বাধীনতা সুলতানি ঘোষণা করতে সক্ষম হয়েছিল তা চিত্রিত করে।

এই টিভি অনুষ্ঠানটি ওরগুজ তুর্কি সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতার ব্যক্তিগত জীবন এবং সুলতান প্রতিষ্ঠার তাদের ইতিহাস শুরুর দিকে অন্তর্দৃষ্টি দেয়। ওসমানের চরিত্রটি তার সন্ধানে অনেক শত্রু এবং বিশ্বাসঘাতকদের মুখোমুখি হয়েছিল এবং শোতে চিত্রিত হয় যে কীভাবে তিনি এই বাধাগুলি কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলেন এবং তাঁর অনুগত সহচর, পরিবার এবং বন্ধুদের সহায়তায় তাঁর মিশনটি সম্পাদন করতে পেরেছিলেন।

উসমান গাজী বা প্রথম উসমান – আনাতলিয়ার বাইজেন্টাইন সীমান্তবর্তী এলাকার তুর্কমেন যাযাবর কায়ী গোত্রের প্রধান আরতুগ্রুল গাজীর ছেলে। কোচদাগ যুদ্ধে মোঙ্গলদের কাছে সেলজুক সাম্রাজ্য পরাজিত হলে, আনাতলিয়ার তুর্কমেনদের শক্তিশালী এই সাম্রাজ্য মোঙ্গলদের করদরাজ্যে পরিণত হয়।আরতুগ্রুল গাজী ছিলেন এই সাম্রাজ্যের অনুগত একজন তুর্কমেন বে। মোঙ্গলদের এই অভ্যুত্থানে তিনিও অন্যান্য তুর্কমেন বেদের মতো নিজের বেইলিকের স্বাধীনতার বিনিময়ে কর পরিশোধ করতেন।

নেতৃত্বের গুণাবলি, যোগ্যতা সবই উসমানের মাঝে ছিল। তাই কায়ী বসতির আশপাশের বসতিগুলো দ্রুত প্রভাবিত হয়ে উসমানের নেতৃত্ব মেনে নেয়। সর্বত্র উসমানের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। সেলজুকদের উপর মোঙ্গলদের প্রভাবে ইতিমধ্যে বিরক্ত জনগণ ধীরে ধীরে উসমানের পতাকাতলে একতাবদ্ধ হতে সীমান্তবর্তী এলাকার দিকে ছুটে যায়।

ইতিহাস বলে, উসমান বে সাহসী, দূরদর্শী এবং নেতৃত্বের গুণাবলির অধিকারী ছিলেন। তিনি বেশ ভালো করেই জানতেন রাষ্ট্র গঠন করতে হলে শুধু তরবারির লড়াই যথেষ্ট নয়। শিক্ষা ও জ্ঞান চর্চার গুরুত্ব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অপরিসীম। তাই তিনি জ্ঞানী ব্যক্তিদেরকে তার এলাকায় আমন্ত্রণ জানাতেন। তাদের সময় দিতেন। নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলেন বিভিন্ন দ্বিনি শিক্ষাকেন্দ্র। এভাবে তরবারি ও জ্ঞানের শক্তি ব্যবহার করে তিনি একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছেন, যেখানে যোদ্ধা থেকে শুরু শায়েখ সব শ্রেণি পেশার মানুষের অবদান অনস্বীকার্য। শায়েখরা নিয়োজিত ছিলেন একজন বিশেষ দায়িত্বে। তাদের কাজ ছিল, বিজিত ভূমিতে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দেওয়া। এভাবে দীর্ঘ সংগ্রাম এবং অসংখ্য সাহসীর আত্মত্যাগ, কায়ী বসতির বে উসমান গাজীকে একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *