নোয়াখালী জেলা কারাগারে নূর হোসেন বাদল নামে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক কয়েদির দুই চোখ কলম দিয়ে খুঁচিয়ে নষ্ট করে দিয়েছে মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আরেক কয়েদি। রোববার সকাল ৬টার দিকে কারাগারের সৈকত ভবনের ২ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারী কয়েদির নাম মহিন উদ্দিন। একটি মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে এক মাস আগে মহিন কারাবন্দি হয়। হামলায় নূর হোসেনের দুই চোখ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সকালেই প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে দুপুরে ঢাকা জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত জেলার আমিরুল ইসলাম সুধারাম মডেল থানায় মামলা করেছেন।
নূর হোসেন বাদল বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাসপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের শাহাব উদ্দিনের ছেলে। তিনি ২০২১ সালে নিজ গ্রামে একটি দলবদ্ধ ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে দুই বছর ধরে ওই কারাগারে বন্দি। হামলাকারী মহিনের বাড়িও একই গ্রামে।
এক কারা কর্মকর্তা জানান, কারাগারের সৈকত ভবনের ২ নম্বর ওয়ার্ডে কয়েদি বাদল ঘুমিয়ে ছিলেন। সকালে সেলের তালা খুললে পূর্বশত্রুতার জেরে ৯৪৪ নম্বর কয়েদি মহিন উদ্দিন একটি কলম নিয়ে বাদলের ওপর হামলা চালায়। এ সময় মহিন কলম দিয়ে বাদলের দুই চোখে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। পরে বাদলের চিৎকারে কারারক্ষীরা এসে মহিনকে সরিয়ে নেয়। সঙ্গে সঙ্গে বাদলকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। মহিন উদ্দিনের অভিযোগ, তিন মাস আগে বাদলের মামারা তাকে মাদক দিয়ে ষড়যন্ত্র করে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। বেগমগঞ্জ উপজেলার ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাদক সেবনের অভিযোগে তাকে এক মাসের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠান। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন মামলায় বাদল দুই বছর ধরে জেলে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা চলমান।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আবদুল আজিম জানান, চোখে গুরুতর জখম অবস্থায় সকালে জেলা কারাগার থেকে এক বন্দিকে হাসপাতালে আনা হয়। এখানে চক্ষু বিশেষজ্ঞ দেখানোর পর তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী ওই রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
ডেপুটি জেল সুপার জাবেদ হোসেন জানান, কারাগারের বাইরে কয়েদি বাদল এবং মহিনের মধ্যে পূর্বশক্রতার জেরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত জেলার আমিরুল ইসলাম সুধারাম থানায় মহিন উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কারা কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি পুলিশ পৃথকভাবে ঘটনাটি তদন্ত করবে।