এবার ১০ ব্যক্তির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

বিভিন্ন দেশে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রেখেছে। বিভিন্ন কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে। যেসব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যেমন- বিনিয়োগ, যাতায়াত প্রভৃতি সেখানে সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এবার মাদক ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে আরও কঠোর হতে চলেছে দেশটি। এ নিয়ে দিয়েছে নতুন নিষেধাজ্ঞাও।

দেশটির পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অবৈধভাবে উৎপাদিত ফেন্টানাইলের পাচাররোধে বিশেষভাবে সচেষ্ট হয়েছে দেশটি। গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ থেকে ৪৯ বছর বয়সী মানুষের মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ হচ্ছে এই অবৈধ ফেন্টানাইল।

গত বছরের ডিসেম্বরে ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন মারাত্মক ফেন্টানাইলের ৩৭ কোটি ৯০ লাখ ডোজ জব্দ করেছে। এর প্রতিটি ডোজ দুই মিলিগ্রাম ওজনের।

সংস্থা জানায়, এই মাদকে অতি আসক্তি তৈরি করে এমন উপাদান উচ্চমাত্রায় রয়েছে, যা হেরোইনের ৫০ গুণ বেশি শক্তিশালী।

এই মাদকের বেশিভাগই মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পাচার হয়ে আসে বলে অভিযোগ করেন সংশ্লিষ্টরা। অবৈধ ফেন্টানাইল, কোকেন এবং অন্যান্য মারাত্মক মাদক যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের পেছনে রয়েছে মেক্সিকোসহ বিভিন্ন দেশের অনেক ব্যবসায়ী। সেই ব্যবসায়ীদের ঠেকাতে নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, অবৈধ এই মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত ১০ ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এর ভেতর ৯ জন মেক্সিকান ও একজন কলম্বিয়ান। নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা মেক্সিকোর ৯ জনই আবার সিনালোয়া কার্টেলের (মেক্সিকোভিত্তিক মাদক ব্যবসায়ীদের সংঘবদ্ধ চক্র) শীর্ষ সদস্য। আর কলম্বিয়ান ওই ব্যক্তি কলম্বিয়ার মাদকপাচারকারী চক্র ডেল গলফোর শীর্ষ নেতা।

এর আগে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাশিয়া, চীনসহ চারদেশের মোট ২৮টি প্রতিষ্ঠানের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। অন্যান্য দেশের মতোই বিশ্বের মোড়ল যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি সম্পর্কিত নীতিমালার দেখভাল করে থাকে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

সোমবার রাশিয়া,চীন, ফিনল্যান্ড ও জার্মানির মোট ২৮টি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এদের মধ্যে রাশিয়াকে ড্রোন তৈরিতে ব্যবহৃত খুচরা যন্ত্রাংশ সরবরাহ করায় ১১টি চীনা ও পাঁচটি রুশ প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। রাশিয়া দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানিও তালিকাভুক্ত হয়েছে। এখন থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রযুক্তি রপ্তানি করতে পারবে না মার্কিন সরবরাহকারীরা।

এক বিবৃতিতে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ বিভাগের প্রধান অ্যালান এস্তেভেজ বলেছেন, যারা ইউক্রেনে পুতিনের অবৈধ ও অনৈতিক যুদ্ধে সরঞ্জাম সরবরাহ ও সমর্থন করবে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও অর্থপূর্ণ ব্যবস্থা নিতে আমরা কোনো দ্বিধা করব না।

এর আগে গত মঙ্গলবার তেহরানের ড্রোন ও সামরিক বিমান নির্মাণকে কেন্দ্র করে ইরান, রাশিয়া, চীন ও তুরস্কের সাত ব্যক্তি ও চার প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ওয়াশিংটন।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, ওই সাত ব্যক্তি ও চার প্রতিষ্ঠান ইরানের এয়ারক্রাফ্ট ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানির চালান ও লেনদেনে সহায়তা করেছে। একই সঙ্গে তারা দেশটির ড্রোন ও সামরিক বিমান নির্মাণের প্রচেষ্টায় সহায়তা করেছে।

মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের টেরোরিজম অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্সের আন্ডার সেক্রেটারি ব্রায়ান নেলসন এক বিবৃতিতে বলেন, ইরান যেভাবে ড্রোন নির্মাণের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে রাশিয়া, তাদের মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদেশ এবং অন্য অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারীরা আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্ন করতে পারে। ইরানের এ ধরনের ড্রোন তৈরির তৎপরতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র।

এর আগে ইরানের কাছে ড্রোনে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ বিক্রি ও সরবরাহের অভিযোগে চীনভিত্তিক পাঁচটি প্রতিষ্ঠান ও এক ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ওয়াশিংটন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *