এবার ড. ইউনূসের বিচার বন্ধ চেয়ে সুপ্রিমকোর্টের ৩০১ আইনজীবীর বিবৃতি

শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের আহ্বান জানিয়ে সরকারের উদ্দেশে বিবৃতি দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের ৩০১ জন আইনজীবী। বিবৃতিতে তার বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলো হয়রানিমূলক দাবি করে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়েছে। ড. ইউনূসের বিচার স্থগিত চেয়ে বিশ্বের ১৭৬ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও নাগরিকের বিবৃতির পর দেশের বিভিন্ন সংগঠন তার প্রতিবাদ জানিয়ে যখন পাল্টা বিবৃতি পাঠাচ্ছেন তখন বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিমকোর্ট-এর বিএনপি ও সমমনা আইনজীবীরা গণমাধ্যমে এই বিবৃতি পাঠিয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা এদেশের আইনজীবী সমাজ মনে করি, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস বর্তমান সরকারের প্রতিহিংসা ও সরকার প্রধানের ব্যক্তিগত আক্রোশ এবং নির্মম হিংসার শিকার। ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ফরমায়েশি বিচার করা হচ্ছে অভিযোগ করে এতে বলা হয়েছে, এই বিচারিক হয়রানি দেশে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুন্ন করছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা বাংলাদেশের সাংবিধানিক আদালতের আইনজীবীগণ সরকারের এহেন আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’

লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সারাবিশ্বের দরিদ্র পীড়িত কর্মহীন মানুষদের স্বপ্নের নায়ক, ক্ষুদ্র ঋণের প্রবক্তা ড. মুহাম্মদ ইউনুস পৃথিবীর সব থেকে কঠিন এবং দীর্ঘ সমস্যা ‘দরিদ্র নিরসনে’ ক্ষুদ্র ঋণের যে ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছেন তা বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের দরিদ্র পীড়িত সমাজ বদলে এক অনন্য নজির। তিনি সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। দরিদ্র নিরসনে দূরীকরণের এক অনবদ্য চিন্তার ফসল এই ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্প যা সারা বিশ্বে সমাদৃত হয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনুস শুধু ক্ষুদ্র ঋণের প্রবক্তাই নন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে সমর্থন আদায় করার লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ সিটিজেনস কমিটি’ গঠন করে বাংলাদেশের পক্ষে বহিবিশ্বের সমর্থন আদায় করেছিলেন। ক্ষুধা ও দারিদ্র দূরীকরণের মাধ্যমে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখায় শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করে বাংলাদেশের ভাবমুর্তি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উজ্জ্বল করেছেন। তিনি স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার, কগ্রেশনা গোল্ড মেডেল, আন্তর্জাতিক গান্ধী শান্তি পুরস্কার ও প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডমস পুরস্কারসহ নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। আমরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে তার জন্য গর্বিত।’

nagad
বিবৃতি প্রদানকারী আইনজীবীদের মধ্যে রয়েছেন- সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট ড. ফরিদুজ্জামান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব, অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রেজা, অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল মাহবুব, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম মেহেদী, অ্যাডভোকেট ফেরদৌস আখতার ওয়াহিদা, অ্যাডভোকেট কেআর খান পাঠান, অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান, ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান, অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম সুমন, অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম সপু, ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরী, ব্যারিস্টার মাহদিন চৌধুরী, ব্যারিস্টার রেদওয়ান আহমেদ রানজীব, অ্যাডভোকেট মোহাদদেস ইসলাম টুটুল, অ্যাডভোকেট মহসিন কবির রকি, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান, ব্যারিস্টার মরিয়ম ই খন্দকার, অ্যাডভোকেট কাজী মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল, অ্যাডভোকেট আল ফয়সাল সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট আব্দুল কাইয়ুম, অ্যাডভোকেট জুলফিকার আলম শিমুল, অ্যাডভোকেট রেশমা রোকাইয়া, অ্যাডভোকেট আইনুন নাহার শিউলি, অ্যাডভোকেট সালমা সুলতানা, অ্যাডভোকেট বিলকিস আরা মিতু প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *