ঋণ করে ছেলেকে ওমান পাঠিয়েছিলেন বাবা, এখন লা’শ আনা নিয়ে দুশ্চিন্তায়

জীবিকার তাগিদে ছয় মাস আগে ছেলেকে ওমানে পাঠিয়েছিলেন বাবা। স্বপ্ন ছিল ছেলে উপার্জন করে পরিবারকে সাহায্য করবে। দুই মাস আগে কাজও শুরু করেছিলেন। কিন্তু একটি সড়ক দুর্ঘটনা পরিবারে স্বপ্ন ভেঙে গেল! ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার যুবক সুলতান আলী। হাসপাতালের আইসিইউতে আট দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ রোববার বিকেলে তাঁর মৃত্যু হয়। এ তথ্য আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন সুলতানের বাবা মো. মিঠু।

সুলতান আলী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের কাশিবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। সুলতানের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত রোববার ওমানের ইবরি এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় একটি প্রাইভেটকার সুলতান আলীকে ধাক্কা দেয়। স্থানীয় পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানেই আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন সুলতান। সুলতান আলীর বাবা মিঠু আজকের পত্রিকাকে জানান, সরকারি ভিসায় ছয় মাস আগে এনজিও থেকে ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ছেলেকে ওমান পাঠান তিনি। কাজ শিখে না যাওয়ার কারণে শুরুতে কাজ পাননি। দুই মাস আগে কাজে যোগ দেন। গত রোববার প্রচণ্ড গরমে কাজের ফাঁকে কোমল পানীয় কিনতে ইবরি এলাকায় রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এমন সময় প্রাইভেট কার ধাক্কা দিলে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান।

এরপর থেকে আইসিইউতে ছিলেন। সুলতানের বাবা আরও বলেন, ঋণের টাকার কিস্তি দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। এখন ছেলের মরদেহ কীভাবে ফিরিয়ে আনবেন, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। ছেলের মরদেহ নিয়ে আসতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। স্থানীয় ইউপি সদস্য মিঠু আলী জানান, অনেক স্বপ্ন নিয়ে ছেলেকে ঋণের টাকায় বিদেশে পাঠিয়েছিলেন মো. মিঠু।

ছয় মাসে কোনো টাকাই দেশে পাঠাতে পারেননি সুলতান। দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ায় পুরো পরিবার বিপাকে পড়েছে। সুলতানের মরদেহ ফেরানোর জন্য যাবতীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করতে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ইউপি সদস্য। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার বলেন, ‘ওমান প্রবাসী যুবক সুলতানের মরদেহ দেশে ফেরাতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে উপজেলা প্রশাসন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *