কমিটিতে পুরোনো নেতাকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করার পর ফের চাঙ্গা হয়ে উঠছে হেফাজতে ইসলাম। এবার তারা সংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে করা মামলা ও আটক নেতাকর্মীদের মুক্তির বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে চান। তাই আগামী বৃহস্পতিবার নীতিনির্ধারণী বৈঠক ডেকেছে হেফাজতে ইসলাম। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদ্রাসায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
হেফাজতের শীর্ষ নেতারা বলছেন, সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলা ও মুক্তির বিষয়ে আলোচনা হবে, নাকি আন্দোলনের জন্য মাঠে নামবেন, সে বিষয়ে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে। তবে হেফাজতের অধিকাংশ নেতা দাবি আদায়ে প্রথমে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক।
গত ৩১ আগস্ট হেফাজতের ৫৩ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ ও ২১১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। বর্ধিত কমিটিতে অনেক বিতর্কিত নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে এ কমিটিতে কারাগারে থাকা মাওলানা মামুনুল হকের স্থান হয়নি। দলটির কয়েকজন নেতা এখনো কারাগারে রয়েছেন। এ ছাড়া যারা জামিনে বের হয়েছেন, তাদের সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন আদালতে মামলা-সংক্রান্ত কাজে যেতে হয়। এ অবস্থায় কর্মীরা দ্রুত সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য নেতাদের চাপ দিচ্ছেন। আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে তবেই তারা আন্দোলনে যেতে চান।
হেফাজতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা নেতাকর্মীদের মুক্তি, মামলা প্রত্যাহারসহ যেসব দাবি আছে, সেগুলো সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের আগেই ফয়সালা করতে চান। অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় মাঠপর্যায়ে কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলনে যাওয়ার বিষয়ে একমত হতে পারছেন না নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে। এ ছাড়া সংগঠনকে শক্তিশালী করতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কমিটি পুনর্গঠন করতে চান তারা।
এ বিষয়ে হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী কালবেলাকে বলেন, বৃহস্পতিবার আমাদের নতুন কমিটির প্রথম বৈঠক হবে। এ বৈঠকে হেফাজত নেতাদের মামলা ও মুক্তির বিষয়ে আলোচনা হবে। এ বৈঠকে মূলত মামলা ও নতুন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা এবং করণীয় নির্ধারণ হবে। সরকারের শেষ সময়ে দাবি আদায়ে আন্দোলনে যাওয়ার চিন্তাভাবনা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৈঠকে সব নেতা উপস্থিত থাকবেন। রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বৈঠকে।
হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মীর ইদ্রিস বলেন, বৈঠকে একাধিক এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হবে। নতুন নেতাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এরপর হেফাজতের যেসব নেতা এখনো মুক্তি পাননি, তাদের বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। মামলা প্রত্যাহারের করণীয় নিয়েও আলোচনা হবে। এসব বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা হবে, নাকি দাবি আদায়ে রাজপথে নামা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে ফটিকছড়ির বৈঠকে।