অর্থসংকটে অচল হওয়ার পথে যুক্তরাষ্ট্র সরকার

যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট কংগ্রেসে সরকারের ব্যয় মেটানোর জন্য অস্থায়ীভাবে বাজেট বা স্টপগ্যাপ ফান্ডিং বিল পাসের বিষয়টি ভেস্তে গেছে। ফলে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আগামী ১ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী অর্থবছর। কিন্তু নতুন অর্থবছরের জন্য এখনো কোনো বাজেট বরাদ্দ করেনি কংগ্রেস। ফলে মাত্র ১ দিন পর থেকে শুরু হতে যাওয়া অর্থবছরে অর্থসংকটের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের কার্যক্রম স্থবির, এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্থগিতও হয়ে যেতে পারে।

এ অবস্থায় ফেডারেল সরকারের শাটডাউন বা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়া এড়াতে অস্থায়ী স্টপগ্যাপ ফান্ডিং বিল আনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন কংগ্রেসের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার ও রিপাবলিকান পার্টির নেতা কেভিন ম্যাককার্থি। কিন্তু তাঁর দলের কট্টর ডানপন্থী অংশের আইনপ্রণেতাদের বিরোধিতার কারণে সেই বিল পাস হতে পারেনি।

স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার কংগ্রেসের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের স্টপগ্যাপ ফান্ডিং বিলটি উত্থাপন করা হয়। কিন্তু বিলটি পাস না হওয়ায় আগামীকাল রোববার থেকে শুরু হতে যাওয়া নতুন অর্থবছরের প্রথম দিনেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে ফেডারেল সরকারের অনেকগুলো শাখার কার্যক্রম।

স্টপগ্যাপ ফান্ডিং বিলে ম্যাককার্থি প্রস্তাব করেছিলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ বাজেটের বিষয়ে কংগ্রেস ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারছে, তার আগে অন্তত আগামী এক মাসের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে স্টপগ্যাপ ফান্ডিং চালু করা হোক। কিন্তু ভোটে বিলটি পাস হয়নি। বিলের পক্ষে ভোট দেন ১৯৮ জন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ও বিপরীতে ভোট দেন ২৩২ জন আইনপ্রণেতা। এই ২৩২ জনের মধ্যে আবার ২১ জন রিপাবলিকান পার্টির। সহজ ভাষায় বলা যায়, নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির আইনপ্রণেতাদের বিরোধিতার কারণেই বিলটি পাস হয়নি।

তবে আশা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। স্থানীয় সময় শনিবার বেলা ১টায় আবার এক দফা ভোট অনুষ্ঠিত হবে। সেই ভোটে অগ্রগতি অর্জিত হলে হয়তো বন্ধ হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যাবে মার্কিন সরকার।

উল্লেখ্য, হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসে রিপাবলিকান পার্টি ২২১ সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও ২১২টি আসন নিয়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটরাও। আবারও কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে এখানে ব্যবধান মাত্র দুটি আসনের। ডেমোক্রেটিক পার্টি ৫১টি আসন নিয়ে এগিয়ে সিনেটে প্রাধান্য ধরে রেখেছে। বিপরীতে ৪৯টি আসন নিয়ে খুব কাছেই অবস্থান করছে রিপাবলিকান পার্টি।

ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের মধ্যে ব্যবধান কম হওয়ায় এবং হাউসের উভয় কক্ষেই কোনো দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ না হওয়ার কারণে কোনো পক্ষই আসলে সেভাবে কোনো বিল পাস বা বাতিল করে দিতে পারছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *