দুনিয়ার বন্ধুত্ব যেভাবে জান্নাত লাভে সহায়ক হবে

হাসান বসরি (রহ.) বলেছেন, ‘তোমরা পৃথিবীতে ভালো মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে তৎপর হও। কেননা, এ সম্পর্কের কারণে হয়তো তোমরা আখিরাতে উপকৃত হতে পারবে।’ তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, কিভাবে? তিনি বলেন, যখন জান্নাতিরা জান্নাতে অধিষ্ঠিত হয়ে যাবে তখন তারা পৃথিবীর ঘটনা স্মরণ করবে এবং তাদের পৃথিবীর বন্ধুদের কথা মনে পড়ে যাবে। তারা বলবে, আমি তো আমার সেই বন্ধুকে জান্নাতে দেখছি না, কী করেছিল সে? তখন বলা হবে, সে জাহান্নামে।

তখন সেই মুমিন ব্যক্তি আল্লাহর কাছে বলবেন, ‘হে আল্লাহ, আমার বন্ধুকে ছাড়া আমার কাছে জান্নাতের আনন্দ পরিপূর্ণ হচ্ছে না।’
অতঃপর আল্লাহ তাআলা আদেশ করবেন, অমুক ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে বের করে জান্নাতে প্রবেশ করাতে। তার বন্ধু জাহান্নাম থেকে রক্ষা পেল এই কারণে নয় যে সে তাহাজ্জুদ পড়ত বা কোরআন পড়ত বা সাদকা করত বা রোজা রাখত; বরং সে মুক্তি পেল শুধু এই কারণে যে তার বন্ধু তার কথা স্মরণ করেছে। তার জান্নাতি বন্ধুর সম্মানের খাতিরে তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হলো।

জাহান্নামিরা তখন অত্যন্ত অবাক হয়ে জানতে চাইবে যে কী কারণে তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হলো, তার বাবা কি শহীদ? তার ভাই কি শহীদ? তার জন্য কি কোনো ফেরেশতা বা নবী শাফায়াত করেছেন?বলা হবে, না; বরং তার বন্ধু জান্নাতে তার জন্য আল্লাহর কাছে অনুরোধ করেছে।
এই কথা শুনে জাহান্নামিরা আফসোস করে বলবে, ‘হায়! আজ আমাদের জন্য কোনো শাফায়াতকারী নেই এবং আমাদের কোনো সত্যিকারের বন্ধু নেই, যার উল্লেখ আছে এই আয়াতগুলোতে : ‘আমাদের কোনো সুপারিশকারী নেই। আর কোনো সহৃদয় বন্ধুও নেই।’ (সুরা শুয়ারা, আয়াত : ১০০-১০১)

খুব বেশি বন্ধু নেই আমাদের।

আর এত বন্ধুর প্রয়োজনও নেই। এমন একজন হলেই তো যথেষ্ট যে জান্নাতে যাওয়ার পর আমাদের সেখানে না পেলে খুঁজবে। সত্যিই কি এমন কেউ আছে, যে জান্নাতে আমাদের না পেলে খুঁজবে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *