তুরাগ তীরে চলছে বিশ্ব ইজতেমার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে আগামী ১৩ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে মুসল্লিমদের দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় গণজমায়েত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। আর এই জমায়েত সফল করতে স্বেচ্ছাশ্রমে চলছে বিশ্ব ইজতেমার ময়দান প্রস্তুতে শেষ মুহূর্তের কাজ। গাজীপুর, ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে তাবলীগ জামাতের সাথিরা এসব কাজ করছেন। করোনার কারণে দুই বছর বন্ধ ছিল বিশ্ব ইজতেমা। এ কারণে এবার দেশ বিদেশের ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিদের আগমন বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা ও মাওলানা জোবায়ের পন্থী এবং মাওলানা সাদ পন্থী মুরুব্বিরা ইজতেমার সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা সভা করেছেন।

শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, পুরোদমে এগিয়ে চলছে প্রস্তুতির কাজ। কেউ ইজতেমা ময়দানে নামাজের দাগ কাটছেন, কেউ বিদ্যুত সংযোগের কাজ করছেন, কেউ প্যান্ডেলের চট সেলাই করছেন, কেউ করছেন খুঁটির ওপর চট টাঙানোর কাজ। অবারে অনেককেই ময়দান পরিষ্কার করতে দেখা গেছে। মঞ্চ তৈরির কাজেও ব্যস্ত ছিলেন অনেকে। ইজতেমা প্রসঙ্গন ঘুরে দেখা যায়, বিদেশি মুসল্লিদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে কামরা। এসব কাজে বৃদ্ধ ও যুবকসহ বিভিন্ন বয়সের মুসল্লিরা স্বেচ্ছাশ্রমে অংশ নিয়েছেন। টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের সম্পূর্ণ মাঠ ইতোমধ্যেই খুঁটি বসানো শেষ হয়েছে। নামাজে দাগ কাটাও প্রায় শেষের দিকে। বিভিন্ন খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে ময়দানটি।

ইজতেমা ময়দানের পশ্চিম পাশের সামিয়ানা টাঙানো কাজ প্রায় শেষ। তবে মাইকের জন্য বৈদ্যুতিক তার স্থাপনের কাজ শুরু হলেও এখনো শুরু হয়নি মাইক লাগানোর কাজ। ময়মনসিংহের আমিনুল ইসলাম বলেন, ইজতেমা ময়দানে। এখানে এসে শ্রম ও অর্থ দিয়ে স্বেচ্ছায় কাজ করছি। এটি একটি সদকায়ে জারিয়া। আমরা দ্বীনের খেদমত এবং দাওয়াত দিতে এসেছি। সারা বিশ্বের মুসলিমদের দাওয়াত দেওয়ার জন্য এই দ্বীনি কাজ করা হচ্ছে।’ শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় বিভিন্ন শিল্প কারখানার শ্রমিকেরাও এসেছেন স্বেচ্ছায় ইজতেমার কাজে অংশ নিতে। কলম্বিয়া কারখানার শ্রমিক শহিদুল হক বলেন,আমরা তো ইচ্ছে করলেই আসতে পারি না। এটি ইসলামের জন্য কাজ এজন্য ছুটে এসে কাজ করছি। আখেরি মোনাজাতের দিন কারখানা কর্তৃপক্ষ ছুটি দেবে তখন আবার আসবো। এদিকে বিশ্ব ইজতেমা সফল ও সুশৃঙ্খল রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম। মোল্ল্যা নজরুল বলেন, এবার আরও সুশৃঙ্খল হবে ইজতেমা। আমরা বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা নিয়েছি। ইজতেমা উপলক্ষে পুলিশের ৫ হাজার ৩০ জন পোশাকে ও ১ হাজার ১১০ জন সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া ট্রাফিক ডিউটিতে থাকবেন ১ হাজার ৩৯৯ জন সদস্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *