সৌদি আরবের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ইয়েমেন সীমান্তে অন্তত ৬৫৫ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে হত্যা করেছে। ২০২২ সালের মার্চ থেকে গত জুনের মধ্যে তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। তবে সৌদি আরব এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এইচআরডব্লিউ সম্প্রতি ‘দে ফায়ার্ড অন আস লাইক রেইন’ নামের একটা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে সৌদি আরব প্রবেশ করতে গিয়ে সীমান্তে আহত ব্যক্তির বয়ানে সীমান্ত হত্যার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
এইচআরডব্লিউর তথ্যমতে, নিহতদের অধিকাংশ ইথিওপিয়ার নাগরিক। তারা যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেন হয়ে সৌদি আরবে প্রবেশের চেষ্টা করেন। উন্নত জীবনের আশায় তারা মধ্যপ্রাচ্যের তেল-সমৃদ্ধ দেশটায় যেতে চান। সীমান্তে তাদের ওপর নির্বিচারের গুলি চালায় ও বিস্ফোরক নিক্ষেপ করে সৌদি আরবের সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
সৌদি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলির মুখে পড়া এক হতভাগা ব্যক্তির নাম মোস্তফা সুফিয়া মোহাম্মদ। তিন মাস অমানুষিক কষ্টের পর ২১ বছর বয়সি সুফিয়া ৪৫ জনের একটি দল নিয়ে সীমান্তে পৌঁছান। এ সময় তাদের ওপর বৃষ্টির মতো গুলি বর্ষণ করা হতে থাকে। এতে তার দলের বেশ কয়েকজন প্রাণ হারান। তিনি নিজেও একটি পা হারান।
দুই সন্তানের জনক মুফিয়া বর্তমানে ইথিওপিয়ায় ফেরত এসেছেন। এখন মা-বাবাই তার দেখভাল করছেন।
এইচআরডব্লিউর তথ্যমতে, ২০২২ সালের মার্চ থেকে গত জুনের মধ্যে সৌদি-ইয়েমেন সীমান্তে অন্তত ২৮টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে ১৪টি।
এইচআরডব্লিউর কর্মকর্তা হাদিয়া হারমান বিবিসিকে বলেন, সৌদি সীমান্তে যা হয়েছে তা গণহত্যা। আমার কাছে ভুক্তভোগীদের হাজার হাজার ছবি ও ভিডিও রয়েছে। আমরা নিহতের সংখ্যা অন্তত ৬৫৫ বললেও প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে বেশি হতে পারে।
জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন জানায়, ইয়েমেন হয়ে বছরে ২ লাখের বেশি মানুষ আফ্রিকায় প্রবেশের চেষ্টা করে। তারা নদীপথে হর্ন অব আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে প্রথমে ইয়েমেনে যায়। সেখান থেকে সৌদি আরবে প্রবেশের চেষ্টা করে।
সূত্র : বিবিসি