একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজা আজ বুধবার দুপুরে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল সিলেট মহানগর জামায়াত। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বাধার মুখে গতকাল মঙ্গলবার রাতে গায়েবানা জানাজার আয়োজন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। তবে ঘোষিত সময়েই একটি পক্ষ আজ গায়েবানা জানাজার আয়োজন করে। এতে কয়েক শ মানুষ অংশ নেন। আজ বেলা দুইটার দিকে সিলেট নগরের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
যদিও সিলেট মহানগর জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এতে দলের কেউ সংশ্লিষ্ট নন। তবে জানা গেছে, গায়েবানা জানাজায় জামায়াত-শিবিরের একাধিক নেতা-কর্মী অংশ নিয়েছেন।
এর আগে গতকাল দুপুরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিলেট মহানগর, জেলা উত্তর ও দক্ষিণ জামায়াতের পক্ষ থেকে আজ বেলা দুইটার দিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়েছিল। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বাধার মুখে গতকাল রাতে গায়েবানা জানাজা আয়োজনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে গিয়ে আয়োজন স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজাহান আলী।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে সিলেট নগরের আলিয়া মাদ্রাসা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা দেখা গেছে। গতকাল গভীর রাতে এবং আজ সকাল থেকে ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা যায়।
আজ বেলা দুইটার দিকে হঠাৎ আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে কয়েক শ মানুষ একত্রিত হন। এ সময় সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় তাঁদের। পরে সেখানে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। গায়েবানা জানাজা চলার একপর্যায়ে সিলেট মহানগর পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় তাঁরা উপস্থিত মুসল্লিদের কাছে জানতে চান, কার জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। উপস্থিত মুসল্লিরা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজার বিষয়টি জানান। এ কথা শুনে পুলিশ কিছু বলেনি। এর কিছু সময় পরই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন মুসল্লিরা।
সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজাহান আলী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা যদিও আগের রাতে জানাজার আয়োজন স্থগিতের ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সেটি মানুষ ধরে ধরে জানাতে পারেননি। এতে সাধারণ মানুষের একটি অংশ এসেছে। তিনি জানাজা দেখেছেন, তবে কাউকে তিনি চিনতে পারেননি। এমনকি যিনি নামাজ পড়িয়েছেন, তিনি কম বয়সী। তাঁকেও চিনতে পারেননি। এতে দলীয় কাউকে অংশ নিতে দেখেননি বলে দাবি করেন শাহজাহান আলী।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. ইলিয়াছ শরীফকে একাধিকবার ফোন দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. জুবায়েদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গায়েবানা জানাজা আয়োজনের বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তিনি খবর নিয়ে দেখছেন।
সূত্র: প্রথমআলো