মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বলে অভিযোগ করেছেন তার মেঝো ছেলে শামীম সাঈদী। তিনি বলেছেন, সাঈদীকে সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তার চিকিৎসার পুরো প্রক্রিয়া ছিল রহস্যজনক।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতে ইসলামীর ভার্চুয়াল দোয়া মাহফিলে এ অভিযোগ করেন।
শামীম সাঈদী বলেন, ‘আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে নিয়ে সাজানো ঘটনা ঘটানো হয়েছে। সরকারের উদ্দেশ্য ছিল সকল শীর্ষনেতাদের হত্যা করা। পরিস্থিতির কারণে আল্লামা সাঈদীকে প্রাথমিকভাবে হত্যা করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু পরে সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘তার জীবনের পুরো সময়টাই কুরআনের জন্য বরাদ্দ ছিল। কারাগারেও তিনি দ্বীনের দাওয়াত সম্প্রসারণে কাজ করে গেছেন।’ তিনি সাঈদীর দেখানো পথে সবাইকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘আল্লামা সাঈদীর চিকিৎসার পুরো প্রক্রিয়া ছিল রহস্যজনক। তাকে পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখাও করতে দেওয়া হয়নি। তাকে লাইভ সাপোর্টে নেওয়া হলেও আমাদের সাথে পরামর্শ করা বা অনুমতি নেওয়া হয়নি।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবু তাহের মো. মা’ছুম বলেছেন, ‘আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে দুনিয়াতে থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। রাসুল (সা.) এভাবে মৃত্যুবরণকারীকে শহীদ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সুরা আল ইমরানের ১৫৭ নং আয়াতেও এই কথা প্রতিধ্বনিত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মাওলানা দুনিয়াবি কোনো স্বার্থে জেলে যাননি বরং কুরআনের বাণী প্রচার করতে গিয়ে সরকারের রোষাণলে পড়ে শাহাদাত বরণ করেছেন।’ এসময় তিনি সাঈদীর চেতনা ও আদর্শকে ধারণ করে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আব্দুর রহমান মুসা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ইসলাম প্রিয়। কিন্তু সরকার ইসলাম বিদ্বেষী। আল্লামা সাঈদীর যেদিন মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় সেদিন সে রায়ের প্রতিবাদে দেড় শতাধিকার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। তার শাহাদতের পরও সরকার সারা দেশে তাণ্ডব চালিয়েছে। ঢাকায় জানাজা পর্যন্ত পড়তে দেওয়া হয়নি।’
অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমির আব্দুর রহমান মুসার সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এএইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগীয় সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, মুফাসফিরে কুরআন ও সাঈদীর সহকর্মী আল্লামা লুৎফর রহমান, সাঈদীর সন্তান শামীম সাঈদী ও মাসুদ সাঈদী, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান পলাশ প্রমুখ।