সমুদ্রের তলদেশে ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেল, দুই দেশকে যুক্ত করা এই সুড়ঙ্গ তাক লাগাবে পুরো বিশ্বকে!

ডেনমার্ক (Denmark) ও জার্মানির (Germany) মধ্যে তৈরি হচ্ছে বিশ্বের দীর্ঘতম আন্ডারওয়াটার টানেল (Underwater tunnel)। বাল্টিক সাগরের ৪০ মিটার নীচে নির্মিত এই অনন্য টানেলটি (Underwater tunnel) ২০২৯ সালের মধ্যে প্রস্তুত হবে। এতে খরচ হবে হাজার কোটি টাকা। টানেলের ভেতরে রেল ও সড়কপথ উভয়েরই উন্নয়ন করা হচ্ছে। ডেনমার্ক (Denmark) ও জার্মানির (Germany) মধ্যে তৈরি হচ্ছে বিশ্বের দীর্ঘতম আন্ডারওয়াটার টানেল। এই টানেল নির্মাণের ফলে সমুদ্রের নিচ থেকে উভয় দেশ একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে। এই ‘আন্ডারওয়াটার টানেল’ ২০২৯ সালের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে। টানেলটি অনেক আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সজ্জিত করা হবে।

টানেলের ভেতরে ডবল লেনের রাস্তা ও রেলপথও তৈরি করা হচ্ছে। ২০২০ সালে ফেহমার্ন বেল্ট টানেলের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সিএনএন’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই টানেলের দৈর্ঘ্য হবে ১৮ কিলোমিটার। এটি ইউরোপের বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্প বলে মনে করা হয়। এই টানেল নির্মাণে খরচ হবে ৫৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি। বাল্টিক সাগরের ৪০ মিটার ভিতরে নির্মিত এই টানেলটি সরাসরি জার্মানির ফেহমার্ন এবং ডেনমার্কের লল্যান্ড দ্বীপকে সংযুক্ত করবে। বর্তমানে সারা বছরই দুই দেশের মধ্যে নৌকায় করে কোটি কোটি মানুষ যাতায়াত করে। এই বোট সার্ভিস রোডেবি (ডেনমার্ক) এবং পুটগার্ডেন (জার্মানি) এর মধ্যে। নৌকায় যেতে ৪৫ ​​মিনিট সময় লাগে। টানেল নির্মাণের ফলে ট্রেনে ৭ মিনিটে এবং গাড়িতে ১০ মিনিটে এই দূরত্ব অতিক্রম করা হবে।

এই টানেলের অফিসিয়াল নাম ফেহমার্ন বেল্ট ফিক্সড লিংক। এটিই হবে বিশ্বের দীর্ঘতম রেল ও সড়ক সুড়ঙ্গ। এতে দুটি ডাবল রোড লেন থাকবে, সার্ভিস লেন হবে আলাদা। দুটি বৈদ্যুতিক রেল ট্র্যাক থাকবে। এই টানেলের সঙ্গে যুক্ত টেকনিক্যাল ডিরেক্টর জেনস ওলে কাসলুন্ডো বলেন, ট্রেনে কোপেনহেগেন থেকে হামবুর্গ পর্যন্ত দূরত্ব যেতে বর্তমান সময়ে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা সময় লাগে। তবে এই টানেল নির্মাণের দূরত্ব অতিক্রম করতে সময় লাগবে ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা।
এই প্রকল্পটি ২০০৮ সালে স্ট্যাম্প করা হয়েছিল, যখন জার্মানি-ডেনমার্ক উভয় দেশ এই টানেল নির্মাণের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। আড়াই হাজারের বেশি মানুষ বর্তমানে এই প্রকল্পের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।

এই টানেল তৈরি করে কী লাভ হবে? ফেহমার্ন বেল্ট টানেল কৌশলগত দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি স্ক্যান্ডিনেভিয়া এবং মধ্য ইউরোপের দেশগুলিকে সংযুক্ত করবে। এই টানেল দিয়ে রেল ও সড়কপথে পণ্য পরিবহন করা হবে। পরিবহণের এই মাধ্যমটি জলবায়ুর দিক থেকেও বেশ অনুকূল বলে মনে করা হয়। ফেহমার্ন বেল্ট টানেল কীভাবে আলাদা? ১৯৯৩ সালে, চ্যানেল টানেলটি নির্মিত হয়েছিল, এটি ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ ছিল যা ইংল্যান্ড-ফ্রান্সকে সংযুক্ত করেছিল। আজকের সময়ে এই টানেল তৈরি হলে খরচ হত প্রায় ১০৯ কোটি টাকা। চ্যানেল টানেল ফেহমার্ন বেল্ট টানেলের চেয়ে দীর্ঘ। চ্যানেল টানেলটি বোরিং মেশিন দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। অন্যদিকে, ফেহমার্ন বেল্ট টানেল নির্মাণে পূর্ব-প্রস্তুত ‘টানেল সেকশন’ জলের নিচে নিয়ে যাওয়া হবে। তাদের সংযোগ করেই টানেল তৈরি করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *