রবিবারের আগেই ভারতের রবি অভিযান শুরু, শনিবার সকালেই সূর্যে পাড়ি দিচ্ছে ইসরোর আদিত্য

উৎক্ষেপণের পর প্রায় ১৬ দিন পৃথিবীর চারিদিকে পাক খাবে আদিত্য-এল১। এই ১৬ দিনে সূর্যের দিকে পাড়ি দেওয়ার জন্য পাঁচটি ধাপে নিজের উপযুক্ত গতিবেগ লাভ করবে আদিত্য।

আরও এক মাহেন্দ্রক্ষণে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। অন্ধ্রপ্রদেশের সতীশ ধাওয়ন স্পেস রিসার্চ সেন্টারের লঞ্চিং প্যাড থেকে শনিবার সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে সূর্যে পাড়ি দেবে ভারতের প্রথম সৌর অভিযান আদিত্য-এল১। তার ২৩ ঘণ্টা ৪০ মিনিট আগে শুক্রবার সকাল থেকেই শুরু হয়ছে এই মহাকাশ অভিযানের কাউন্টডাউন পর্ব। ইসরো জানিয়েছে, শনিবার সকাল ১১টা ২০ মিনিট থেকেই এই অভিযান সরাসরি দেখতে পাওয়া যাবে। যথা সময়ে শ্রীহরিকোটা থেকে এই আদিত্য-এল১ মহাকাশযানটিকে নিয়ে উড়বে পিএসএলভি-সি৫৭ রকেট। শুক্রবার ইসরোর এই সৌর অভিযানের সাফল্য কামনায় আদিত্য-এল১ মহাকাশযানের ছোট মডেল নিয়ে পুজোও দেওয়া হয়েছে তিরুপতির মন্দিরে।

উৎক্ষেপণের পর প্রায় ১৬ দিন পৃথিবীর চারিদিকে পাক খাবে আদিত্য-এল১। এই ১৬ দিনে সূর্যের দিকে পাড়ি দেওয়ার জন্য পাঁচটি ধাপে নিজের উপযুক্ত গতিবেগ লাভ করবে আদিত্য। এর পর ১১০ দিন সূর্যের অভিমুখে যাত্রা করে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়ে নক্ষত্রটিকে পর্যবেক্ষণ করবে আদিত্য এল১। সূর্য সম্পর্কে অজানা অনেক তথ্য এর মাধ্যমে ইসরোর হাতে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। পৃথিবী থেকে সাড়ে ১০ লক্ষ কিলোমিটার দূরে পাঠানো হবে আদিত্য এল১-কে। এই অংশকে বলা হয় ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্ট। এখানে সূর্য এবং পৃথিবীর আকর্ষণ এবং বিকর্ষণ বল একসঙ্গে ক্রিয়াশীল। ফলে এই অঞ্চলে পৌঁছে কৃত্রিম উপগ্রহ স্থির থাকতে পারে। মহাকাশের পরিবেশ, আবহাওয়া, তার উপর সূর্যের কী প্রভাব পড়ে, সে সব জানার চেষ্টা করবে আদিত্য এল১। আদিত্য এল১-এ মোট সাতটি পে-লোড থাকবে। এ গুলি সূর্যের বিভিন্ন স্তর খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণের জন্য তৈরি করা হয়েছে। ফটোস্ফিয়ার থেকে ক্রোমোস্ফিয়ার কিংবা সূর্যের একে বারে বাইরের দিকের স্তর কোরোনা, পর্যবেক্ষণ করবে এই পে-লোডগুলি। এ ছাড়া, সূর্যের উত্তাপ, সৌর পদার্থের নিঃসরণ, সৌরঝড়ের মতো সূর্যকেন্দ্রিক বিষয়গুলি বুঝতেও বিজ্ঞানীদের সাহায্য করবে। ভিসিবল এমিশন লাইন করোনাগ্রাফি(ভিইএলসি) এবং সোলার আল্ট্রাভায়োলেট ইমেজিং টেলিস্কোপ (এসএউআইটি) নামে দু’টি মূল পে লোড রয়েছে। অন্যগুলি হল— সোলার লো এনার্জি এক্স-রে স্পেক্ট্রোমিটার (এসওএলইএক্সএস), হাই এনার্জি এল১ অরবিটিং এক্স-রে স্পেক্ট্রোমিটার (এইচইএল১ওএস), আদিত্য সোলার উইন্ড পার্টিকল এক্সপেরিমেন্ট (এসপিইএক্স) এবং প্লাজ়মা অ্যানালাইজ়ার প্যাকেজ ফর আদিত্য (পিএপিএ)। উল্লেখ্য, চন্দ্রযান-৩-এর চারটি পেলোড রয়েছে।

এর আগে গত ২৩ অগস্ট চাঁদে মহাকাশযান পাঠিয়েছে ইসরো। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভারতই প্রথম পা রেখেছে। চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম পাখির পালকের মতো অবতরণ করেছে চাঁদের পিঠে। তার পর তা থেকে বেরিয়ে এসেছে রোভার প্রজ্ঞান। রোভারটি চাঁদে ঘুরে ঘুরে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। মোট ১৪ দিন এই অনুসন্ধান চলবে। চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্য ইতিহাসের পাতায় ইসরো তথা ভারতের নাম উজ্জ্বল করেছে। এ বার সকলের চোখ তাই সূর্য অভিযানের দিকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *