যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ডের জন্য অপেক্ষা করতে করতেই মা’রা যাবে ৪ লাখ.

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব বা গ্রিন কার্ড পাওয়া অভিবাসীদের কাছে অনেকটাই স্বপ্নের মতো। কিন্তু এ জীবনে হয়তো সেই স্বপ্ন পূরণ হবে না কয়েক লাখ বিদেশির। কারণ গ্রিন কার্ডের জন্য অপেক্ষা করতে করতেই আয়ুষ্কাল ফুরিয়ে যাবে তাদের। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক ট্যাংক ক্যাটো ইনস্টিটিউটের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। খবর এনডিটিভির।

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের স্থায়ী বসবাসের অনুমতির সরকারি নথিকে গ্রিন কার্ড বলা হয়। জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান-ভিত্তিক গ্রিন কার্ডের জন্য ১৮ লাখের বেশি আবেদন জমা পড়া রয়েছে। এর মধ্যে ৬৩ শতাংশ, বা প্রায় ১১ লাখ আবেদনই ভারতীয়দের। এর সঙ্গে ফ্যামিলি-স্পন্সর ব্যবস্থায় গ্রিন কার্ডের আবেদন আটকে রয়েছে প্রায় ৮৩ লাখ।

ক্যাটো ইনস্টিটিউট বলছে, নতুন ভারতীয় আবেদনকারীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এই ‘ব্যাকলগ’ (জট) ‘যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের’ মতো। দেশটিতে স্থায়ী বসবাসের অনুমতির জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হতে পারে ১৩৪ বছরেরও বেশি। ফলে অন্তত ৪ লাখ ২৪ হাজার কর্মসংস্থান-ভিত্তিক আবেদনকারী অপেক্ষা করতে করতেই মারা যাবেন এবং তাদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি থাকবেন ভারতীয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে নিয়োগদাতা-স্পন্সরকৃত নতুন আবেদনকারীদের মধ্যে অর্ধেক ভারতীয় নাগরিক। এটি বিবেচনায় বলা যায়, নতুন স্পনসরকৃত অভিবাসীদের প্রায় অর্ধেকই গ্রিন কার্ড পাওয়ার আগে মারা যাবেন।

যুক্তরাষ্ট্র এসটিইএম (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত) সংক্রান্ত কাজের জন্য প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক ভারতীয় এবং চীনা নাগরিকদের নিয়োগ দিয়ে থাকে। কিন্তু কর্মসংস্থান-ভিত্তিক গ্রিন কার্ড পেয়ে থাকেন কোনো একটি দেশের মাত্র সাত শতাংশ আবেদনকারী। এই নিয়মটাই মূলত সমস্যায় ফেলে দিয়েছে ভারতীয়দের।

দীর্ঘদিন গ্রিন কার্ডের জন্য অপেক্ষা যুক্তরাষ্ট্রে একটি সংকটে পরিণত হয়েছে। এটি সমাধানে বাইডেন প্রশাসন বেশ কিছু উদ্যোগ নিলেও জট কাটেনি। আর তাতেই অস্থির হয়ে উঠেছেন ভারতীয় আবেদনকারীরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই আশ্চর্যজনক জট এবং ব্যাপক অপেক্ষার বিষয়টিতে স্পষ্ট যে, যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ অভিবাসন প্রায় অসম্ভব। এমনকি জটের মধ্যে পৌঁছাতেও বিরাট সৌভাগ্যের প্রয়োজন হয়। আর যে ক’জন সৌভাগ্যবান মানুষ এই গোলকধাঁধায় পৌঁছান, তারাও ভয়ংকর অভিজ্ঞ মুখোমুখি হন। দশকের পর দশক, এমনকি জীবদ্দশায় কখনোই গ্রিন কার্ড না পাওয়ার দুশ্চিন্তা তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় তাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *