আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেছেন, মির্জা ফখরুলসহ যারা আজ সাঈদীর পক্ষে কথা বলছেন সবাই সাঈদী। আমরা এই সাঈদীদের রুখে দিব।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভার আয়োজন করে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি শিরোনামে ওই সভায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সাঈদীর মৃত্যুর পর তার পক্ষের লোকেরা শোক প্রকাশ করবে সেটা স্বাভাবিক। মির্জা ফখরুল শোক প্রকাশ করেছেন এতে আমি বিস্মিত হইনি। তবে যেটা অস্বাভাবিক, যার জন্য আমি বাকরুদ্ধ- তা হলো শতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী সাঈদীর জন্য শোক প্রকাশ করেছেন। এটা আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। কিন্তু এটা প্রমাণিত সত্য। আমি শুনেছি এদের অনেককেই বহিষ্কার করা হয়েছে, আশা করছি এদের বিরুদ্ধে আরও কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাবেক এই বিচারপতি বলেন, এখন শাতাধিক নেতাকর্মী ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াতে ধরা পড়েছে বলে জানতে পেরেছি। এমন কত শত আছে তার কোনো হিসাব আমাদের কাছে নেই। এরা জামায়াত বিএনপির লোক, ধর্মান্ধ ব্যবসায়ী পরিবারের লোক। অনেক আগে বলা হয়েছিল দলে অনুপ্রবেশকারীদের নেওয়া হবে না। কিন্তু কীভাবে শতাধিক লোক এমন পোস্ট দিচ্ছে ফেসবুকে।
সরকারি চাকরিজীবীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, জামালপুরে এক স্কুলের ধর্মবিষয়ক শিক্ষক ১৫ আগস্টে শোক দিবসের দোয়া অনুষ্ঠানে সাঈদীকে নিয়ে দোয়া করেছেন। জানতে চাইলে এই বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বললেন ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখা উচিত, তার ভুল হয়েছে। রাজশাহীর এক পুলিশ পরিদর্শক সেও স্ট্যাটাস দিয়েছেন। আমরা আসলে যাচ্ছি কোথায়! আমি কয়েক বছর আগে এক জেলায় গিয়েছিলাম সেখানে গিয়ে দেখলাম সদ্য বিদায়ী এক জামায়াতের লোককে আওয়ামী লীগের নমিনেশন দেওয়া হচ্ছে। পরে আমরা বাধা দিলে তাকে আর নমিনেশন দেওয়া হয়নি। যারা এমন কাজ করছে তাদের চাকুরিচ্যুত করতে হবে। প্রচলিত আইনে তাদের বিচার করতে হবে।
সাঈদীর আপিল বিভাগের রায় নিয়ে তিনি বলেন, তার আপিল আবেদনের সময় আমি বিচারক ছিলাম। আমার সাথে থাকা বাকি বিচারকরা তার ফাঁসির রায় না দিলেও আমি ফাঁসির রায় দিয়েছিলাম। আমার কাছে এখনো সেই আদেশ লেখা আছে। আমি সারাজীবন বলতে পারব আমি এই শাস্তি দিয়েছিলাম।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উদ্যোগে সংগঠনের সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের সহসাধারণ সম্পাদক শহীদ সন্তান অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, আরমা দত্ত এমপি, শিক্ষাবিদ শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, আবৃত্তিশিল্পী মো. শওকত আলী প্রমুখ।