রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলায় জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল থেকে গ্রেফতার ৪৬ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) গ্রেফতার নেতাকর্মীদের আদালতে উপস্থিত করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক মামুন মাতুব্বর। অপরদিকে আসামিদের জামিন চেয়ে আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শান্তা আক্তারের আদালত আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জানা গেছে, সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাজলায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জানাজায় বাধা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা ও গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে পুলিশের অনুমতি ছাড়াই বিক্ষোভ মিছিল বের করে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখা।
শাখা সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে এ মিছিলটি অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবু সাদিক, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সালাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী পূর্বের সভাপতি তাকরিম হাসানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। মিছিলে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় পুলিশসহ আহত হন অনেকে।
এ ঘটনায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. রাসেদুল ইসলাম আটক ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ১৮৬০ সালের পেনাল কোড আইনের ১৪৩/১৪৭/ ১৪৮/১৪৯/১৮৬/৩০৭/ ৩৩২/৩৩৩/৩৫৩/ ৪২৭/ ১০৯ ও ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানবলি আইনের ৩/৪ এবং ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলায় তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, জামায়াত নেতাকর্মীরা ৮ সেপ্টেম্বর সকাল অনুমান ৮টা ২০ মিনিটে বিক্ষোভ মিছিল বের করে যাত্রাবাড়ী থানার কাজলা পানির পাম্পের সামনে অবস্থান করে বেআইনী জনতাবদ্ধে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র, ইট পাটকেল, বাঁশের লাঠিসহ সজ্জিত হয়ে বিভিন্ন প্রকার সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে থাকে এবং রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে যান চলাচল বন্ধ করে জনগণের চরম ভোগান্তির সৃষ্টি করে। পুলিশ বেআইনী জনতাকে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার জন্য এবং যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার অনুরোধ করলে তারা পুলিশের প্রতি চরম ক্ষিপ্ত হয়ে মারমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। এ সময় রাস্তার উপর ২/৩ টি বাস গাড়ির গ্লাস ভাংচুরসহ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে রাস্তায় দাঙ্গা হাঙ্গামা করে পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দিয়ে হত্যার উদ্দেশে ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণ করে।
একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার উদ্দেশে আমাদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। অতঃপর জনগণ ও পুলিশের জানমাল রক্ষার্থে দাঙ্গাকারীদের আটক করার জন্য ধাওয়া করলে তাহাদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এরপর তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।