মশা মারা শিখতে বিদেশ ভ্রমণ, ব্যয় ১০ কোটি

দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু। এরই মধ্যে সব রেকর্ড ভেঙেছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। তাই ডেঙ্গুবাহী এই মশা দমন শিখতে বিদেশ যাবেন স্থানীয় সরকার বিভাগের ৬০ কর্মকর্তা। এতে শুধু বৈদেশিক গবেষণা বাবদ প্রস্তাব করা হয়েছে ১০ কোটি টাকা। বর্তমানে পিইসি সভায় অনুমোদনের অপেক্ষায় আটকে আছে প্রকল্পটি।

সম্প্রতি ‘ইম্প্রুভমেন্ট অব আরবান পাবলিক হেলথ প্রিভেন্টিভ সার্ভিসেস’ নামে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে এলজিইডি। জানা যায়, পুরো প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ২৮৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে এক হাজার ৭৩ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক, বাকি টাকা মেটানো হবে সরকারি কোষাগার থেকে।

প্রস্তাবিত প্রকল্পের ব্যয়ের হিসাব ঘেঁটে দেখা যায়, ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে রক্ষায় বৈদেশিক গবেষণা বাবদ প্রস্তাব করা হয়েছে ১০ কোটি টাকা। ভেক্টর ম্যানেজমেন্টে সফল হওয়ায় ভ্রমণের জন্য অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, চায়না, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া বা ব্রাজিলকে বেছে নেওয়া হতে পারে।

প্রকল্পে ২০টি পাবলিক টয়লেট খাতে খরচ ধরা হয়েছে ৫৮ কোটি টাকা। আর একটি ফগার মেশিন কিনতে ব্যয় সংস্থান করা হয়েছে ৫ লাখ টাকা। যদিও বাজারে ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় মেলে ভালো মানের একটি ফগার মেশিন। এমন অধিকাংশ পণ্য মূল দামের চেয়ে ৫ থেকে ২০ গুণ পর্যন্ত বেশি দামে কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

মশা মারা শিখতে বিদেশ ভ্রমণ, ব্যয় ১০ কোটি

এ বিষয়ে এলজিইডির এপিএস নুরে আলম সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে জানান, প্রকল্পে বিদেশ ভ্রমণের বিষয়টি ঠিক নয়। যেসব দেশ ডেঙ্গু প্রতিরোধে সফল হয়েছে সেসব দেশে রিসার্চ করতে যাবেন কর্মকর্তারা।

আগে দুই মাস ডেঙ্গু থাকত, কিন্তু এখন সারা বছর দেখা যাচ্ছে ক্লাইমেট চেঞ্জ হচ্ছে। এ বিষয়ে রিসার্চ করা হবে। এ বিষয়ে গবেষণা দরকার ও বিশেষজ্ঞ তৈরি জরুরি বলে জানান তিনি।

পরিকল্পনা কমিশন বলছে, প্রকল্প ঋণের আওতায় যেহেতু যানবাহন কেনা বাদ দিতে হবে, প্রয়োজনে কিছু গাড়ি ভাড়া নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া সরকারের শীর্ষপর্যায় থেকে প্রকল্পে বিদেশ সফরও নিষেধ রয়েছে। এটাও বাদ দেওয়া যেতে পারে। প্রস্তাবে বেশকিছু খাতে অতিরিক্ত ব্যয় ধরা হয়েছে। এসব খাতে ব্যয় যৌক্তিক পর্যায়ে কমানোর কথা বলা হয়েছে।

বৈদেশিক প্রশিক্ষণ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের প্রধান মো. মাহবুবুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, খুব যৌক্তিক না হলে কোনো বিষয় অনুমোদন দেওয়া হবে না। ৬০ জন কর্মকর্তার বৈদেশিক গবেষণার বিষয়টি এখনো ফাইনাল কিছু হয়নি বলে জানান তিনি।

জানা যায়, মশা মারার পাশাপাশি মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং অসংক্রামক রোগ বিষয়েও কার্যক্রম থাকবে এ প্রকল্পে। এটি অনুমোদন পেলে জুলাই ২০২৩ থেকে জুন ২০২৮ মেয়াদে পাঁচ বছরে বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *