ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের পরে নিহত ১৫০

লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের প্রভাবে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এতে গত দুই দিনে কমপক্ষে ১৫০ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানা যায়। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে নিখোঁজ রয়েছেন আরও কয়েক ডজনের বেশি মানুষ। যে কারণে মৃতের সংখ্যা দুই শতাধিক হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বেনগাজিতে রেড ক্রিসের প্রধান কাইস ফাখেরি লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড়-বন্যায় প্রাণহানির এই তথ্য জানিয়েছেন বলে খবর দিয়েছে রয়টার্স।

তিনি বলেন, ‘আমরা ভবন ধসের পর অন্তত ১৫০ জনের মৃত্যুর তথ্য রেকর্ড করেছি। মৃতের সংখ্যা আড়াইশ জনে পৌঁছাতে পারে শঙ্কা করছি। পরিস্থিতি খুবই বিপর্যয়কর।’

লিবিয়ার বেনগাজি-ভিত্তিক প্রশাসনের মুখপাত্র মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, “ডেরনা, জাবাল আল-আখদার অঞ্চল এবং আল-মারজের শহরতলীতে ঝড় ড্যানিয়েলের কারণে বন্যা ও প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে কমপক্ষে ১৫০ জন নিহত হয়েছে।” বার্তা সংস্থা এএফপিকে এই তথ্য জানান তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দেশটির বেনগাজি, সোসি, আল-বায়দা, আল-মারজ এবং দেরনা শহরে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় তলিয়ে যাওয়া গাড়ির ছাদে অনেক মানুষ আটকা পড়েছেন।

সোমবার টেলিফোনে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেরনা শহরের বাসিন্দা আহমেদ মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম এবং ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর দেখতে পাই আমাদের বাড়িতে পানি। আমরা ঘরের ভেতরে রয়েছি এবং বের হওয়ার চেষ্টা করছি।’

নিখোঁজদের মধ্যে লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মির (এলএনএ) সাত সদস্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন এলএনএর মুখপাত্র আহমদ মিসমারি। খলিফা হাফতারের নেতৃত্বাধীন এই বাহিনী বিভক্ত দেশটির পূর্বাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে।

পূর্ব লিবিয়ার আলমোস্তকবাল টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ফুটেজ দেখা যায়, প্রবল বন্যায় যানবাহন ভেসে যাচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, উপকূলীয় শহর দেরনায় পানির স্তর বিপৎসীমার তিন মিটার (১০ফুট) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলভিত্তিক সংসদ ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় প্রাণহানির ঘটনায় দেশে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে, ত্রিপোলির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী আবদুলহামিদ আল-বেইবাহও ক্ষতিগ্রস্ত সব শহরে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে তাদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলকে ‘দুর্যোগ কবলিত’ এলাকা বলে অভিহিত করেছেন।

দেশটির প্রধান চারটি তেল বন্দর রাস লানুফ, জুয়েটিনা, ব্রেগা এবং এস সিদ্রা শনিবার সন্ধ্যা থেকে তিন দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে সেখানকার দুই তেল প্রকৌশলী রয়টার্সকে জানিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে। কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। স্কুল ও দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে এবং কারফিউ জারি করেছে।

সূত্র: রয়টার্স, আরব নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *