
বাংলাদেশে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, চীন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয় নিয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। বাংলাদেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে, আগামীতে কাকে ক্ষমতায় আনবে।
বুধবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে সচিবালয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের বলেন, আমি আগেই জোর দিয়ে বলেছি, আমরা একটি বিষয়ে এখনও অবিচল যে চীন কখনোই কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে চীন। নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এটিই আমাদের সিদ্ধান্ত।
মোংলা বন্দরের উন্নয়ন নিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা মোংলা বন্দরের উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেছি। এই বন্দর ও পদ্মা সেতু কীভাবে ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে আমাদের কথা হয়েছে। বাংলাদেশের পশ্চিম অংশের উন্নয়নের ভালো সুযোগ আমাদের কাছে আছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে চায় চীন। ভবিষ্যৎ প্রস্তুতি নিয়ে বার্তা দিতেই আমি এখানে এসেছি।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে চীনের সিদ্ধান্ত জানালেন রাষ্ট্রদূত
মধ্যপ্রাচ্যে চীন কীভাবে আমেরিকার বিকল্প হচ্ছে?
মোংলা বন্দর উন্নয়নে কী ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে, জানতে চাইলে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকীকরণে সহায়তা করবে চীন। বৈদ্যুতিক যান উৎপাদনে বিশ্বে আমরাই সবচেয়ে বড়। কাজেই আমরা কেন মোংলা বন্দরে বৈদ্যুতিক ও ব্যাটারি প্ল্যান্ট স্থাপন করব না? আইসিটি, সৌর বিদ্যুৎ ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণেও বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারবে চীন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ ফল উৎপাদিত হয়। ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপনে সহায়তা করতে পারে চীন। কাজেই মোংলা বন্দরকে কেন্দ্র করে আমরা অনেক সম্ভাবনা দেখছি। প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বটা তারা আরও বেশি এগিয়ে নিতে চায়, আমরাও চাই। আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের ভূমিকা খুবই পরিষ্কার। আমরা চাই, বাংলাদেশের জনগণই নির্ধারণ করবে যে দেশ কারা পরিচালনা কে করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাই চান।
কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়াও শিল্প ও তৈরি পোশাকখাতে চীন বিনিয়োগ করতে চায় বলেও জানিয়েছেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা (চীন) যে ভূমিকা রাখছে, যেভাবে সহযোগিতা করছে, তা নিয়ে আমাদের কথা হয়েছে। মোংলা বন্দরের আধুনিকায়নে তারা একটি প্রকল্প দিয়েছেন। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের শিল্পের ক্ষেত্রে তারা বিনিয়োগ করতে চায়। কৃষি শিল্প, তৈরি পোশাক খাতে তারা ভূমিকা রাখতে চায়।
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের শিপিং লাইনে তাদের কাছ থেকে জাহাজ নিয়েছি। আরও চারটি চুক্তির পর্যায়ে আছে। এগুলো দ্রুত করার বিষয়ে কথা হয়েছে। যাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মসৃণ হয়।