বাংলাদেশসহ ৪০ দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ। এসব দেশে ২২০ ব্যক্তি ও ২৫ প্রতিষ্ঠান সরকার এবং প্রভাবশালী গোষ্ঠীর লাগাতার হয়রানি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রতিশোধপরায়ণতার শিকার হচ্ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক সংস্থার ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এসব দেশের ক্ষমতাসীন সরকার ও প্রভাবশালী গোষ্ঠীকে এমন আচরণ থেকে বের হয়ে ‘ডু নট হার্ম’ নীতি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল (ইউএনএইচআরসি) ‘কো অপারেশন উইথ ইউনাইটেড নেশনস, ইট’স রিপ্রেজেন্টেটিভস অ্যান্ড মেকানিজমস ইন দ্য ফিল্ড অব হিউম্যান রাইটস’ শীর্ষক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। ওই রিপোর্টে এসব দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। রিপোর্টটি নিয়ে জেনেভায় হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলে আলোচনা চলছে। এ সেশনটি আগামী ৬ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।
রিপোর্টটিতে ২০২২ সালেরর ১ মে থেকে শুরু করে ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে রাষ্ট্র ও ক্ষমতাবানদের উৎপীড়নের শিকার এসব ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর সবাই মানবাধিকার তৎপরতা ও সিভিল সোসাইটির সঙ্গে যুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ছাড়াও তালিকায় রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, চীন, আলজেরিয়া, আফগানিস্তান, এন্ডোরা, বাহরাইন, বেলারুশ বুরুন্ডি, ক্যামেরুন, কলোম্বিয়া, কিউবা, কঙ্গো, জিবুতি, মিসর, ফ্রান্স, গুয়েতেমালা, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, ইসরায়েল, সৌদি আরব, লিবিয়া, মালদ্বীপ, মালি, মেক্সিকো, মিয়ানমার, নিকারাগুয়া, ফিলিপাইন, কাতার, রাশিয়া, দক্ষিণ সুদান, তানজেনিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উজবেকিস্তান, ভিয়েতনাম, ভেনুজুয়েলা, ইয়েমন ও ফিলিস্তিন।
This year's report of the Secretary-General on intimidation and reprisals for cooperation with the @UN includes 40 countries in all regions.
"14 are current members of this [Human Rights] Council," @UNHumanRights Assistant Secretary-General Ilze Brands Kehris told #HRC54 pic.twitter.com/h8khb1bB1A
— United Nations Human Rights Council | 📍 #HRC54 (@UN_HRC) September 28, 2023
রিপোর্ট প্রসঙ্গে সোমবার জাতিসংঘের মহাসচিব একটি বিবৃতি দিয়েছেন। ওই বিবৃতিতে তিনি বলেন, জাতিসংঘ সব রকম ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রতিশোধমূলক তৎপরতা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ভিন্নমত পোষণকারীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও উৎপীড়নের ব্যাপারে জাতিসংঘ জিরো টলারেন্স নীতি মেনে চল। আলাপ আলোচনা ও সংলাপের ভিত্তিতে যাবতীয় সমস্যার সমাধান সম্ভব বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
মহাসচিব বলেন, জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলোকে আরও গণতান্ত্রিক করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমরা প্রতিশোধমূলক মামলাগুলির প্রতি নিজেদের প্রতিক্রিয়া আরও জোরদার করব। বার্ষিক প্রতিবেদনে এ ধরনের ঘটনা শনাক্ত ও নথিপত্র উপস্থাপনে আমাদের প্রয়াস আরও অব্যাহত থাকবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইউএনএইচআরসির প্রধান ও জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব ইলজে ব্র্যান্ডস কেহরিস বলেন, বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে তারা উৎপীড়নের শিকার ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগুলোর সঠিক সংখ্যা তুলে আনতে পারেননি। বাস্তবে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি।