অনেকদিন ধরেই কারাগারে বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কিন্তু এ নিয়ে তার কোনো আক্ষেপ নেই। শুক্রবার ইমরান খান বলেন, তিনি প্রয়োজনে এক হাজার বছর কারাবাস সহ্য করতেও প্রস্তুত। দেশের জন্য তিনি দিনের পর দিন কারাগারে বন্দি থাকতে প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানান।
একটি দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে বর্তমানে ওই কারাগারে বন্দি রয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান (৭০)। গত ৫ আগস্ট তোশাখানা মামলায় পিটিআই চেয়ারম্যানকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ রুপি জরিমানা করেন স্থানীয় একটি আদালত। এর পরপরই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পিটিআইয়ের পক্ষ থেকে ইমরান খানকে আদিয়ালা কারাগারে নেওয়ার আবেদন জানানো হলেও তাকে পাঞ্জাব প্রদেশের কুখ্যাত অ্যাটক কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে সেখানেই দিন কাটছে তার।
আইএইচসি প্রধান বিচারপতি আমের ফারুক এবং বিচারপতি তারিক মেহমুদ জাহাঙ্গিরির সমন্বয়ে গঠিত একটি ডিভিশন বেঞ্চে আগামী মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) ইমরান খানের মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
শুক্রবার আইনজীবী দলের সদস্য উমিয়ার নিয়াজি অ্যাটক কারাগারে ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভালো আছেন। যদিও তার দাঁড়ি বড় হয়ে গেছে। দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
উমিয়ার নিয়াজি বলেন, তাকে (ইমরান খান) আজ একটি আয়না এবং শেভিং কিট দেওয়া হয়েছে। নিয়াজি জোর দিয়ে বলেন, তাদের আইনজীবী দলের ছয়জনের মধ্যে শুধু তাকেই ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
এই আইনজীবী জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কাছে আইনি দলের প্রবেশাধিকারের অনুমতি দিয়েছিল আদালত। কিন্তু তা অস্বীকার করায় জেলারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করতে চান তিনি।
উমিয়ার নিয়াজি জানিয়েছেন, ইমরান খান কারাবাস নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কারাগারের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে তিনি মোটেও চিন্তা করছেন না। তিনি বলেছেন, এক হাজার বছর জেলে রাখলেও তার কিছু যায় আসে না। তিনি সবকিছুর জন্য প্রস্তুত কারণ স্বাধীনতার জন্য ত্যাগ স্বীকার করতেই হবে।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে ১৪০টির বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২০২২ সালের এপ্রিলে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। এরপরেই সন্ত্রাস, সহিংসতা, ব্লাসফেমি, দুর্নীতি এবং হত্যার মতো অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।
এর আগে পিটিআই-এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে, ইমরান খানের জীবন ঝুঁকির মুখে আছে। দলের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কুরেশি দাবি করেন, কারাগারে ইমরান খানের জীবন বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। এমনকি সেখানে তাকে খাবারও দেওয়া হচ্ছে না।
অ্যাটোক কারাগারে সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে। ওই কারাগারে ‘বি ক্লাস’ সুবিধা দেওয়া হয় না। ইমরান খানের আইনজীবীরা দাবি করেন, তাকে যে সেলে রাখা হয়েছে তা পোকামাকড়ে ভরা এবং সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে তৃতীয় শ্রেণির (সি ক্লাস) সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।