ঢাকাই এসে অলিগলি ঘুরে

ঢাকা সফরে রাজধানীর অলিগলি ঘুরে দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। তবে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানরা দেশের বিশেষ কোনো স্থানে ভ্রমণে গেলে যেভাবে সব জায়গা ঝাঁ চকচকে করে রাখা হয়, সেভাবে চাইছেন না এই ফরাসি প্রেসিডেন্ট। মাখোঁ রাতের ঢাকা ঘুরে দেখবেন। মানুষের স্বাভাবিক জীবনাচরণ, বদলে যাওয়া ঢাকার উন্নয়ন দেখার পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী এ শহরটির অলিগলিতে ঘুরবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসছেন। ভারতে জি-২০ সম্মেলন শেষে ঢাকায় আসবেন তিনি। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, আগামী রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে ইমানুয়েল মাখোঁকে বহনকারী বিমান। এরপর তাকে বরণ করে নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীও একই দিনে জি-২০ সম্মেলন শেষে ঢাকায় ফিরবেন। তবে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমান কিছু সময় আগেই বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। এরপর তিনি সেখানেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের অপেক্ষায় থাকবেন। সূত্র বলছে, বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে উঠবেন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে।

এরপর রাতে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্যে ডিনারে অংশ নেবেন। ডিনার শেষে ইমানুয়েল মাখোঁ ঘুরে দেখতে বের হবেন রাতের ঢাকা। অলিগলি ঘুরে মাখোঁ যাবেন ধানমন্ডি লেকে। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করবেন। লেকপাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের পর তিনি যাবেন বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতির ধারক জলের গান ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট রাহুল আনন্দের বাসায়। সেখানে আনন্দ উদযাপনের পাশাপাশি শুনবেন রাহুল আনন্দের গান। আনন্দ আয়োজন শেষে মাখোঁ ফিরে যাবেন হোটেলে। পরদিন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। মাখোঁকে অভ্যর্থনা জানাবেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা ও তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। বৈঠক শেষে চুক্তি স্বাক্ষর হবে। দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর এবং সবশেষে দুদেশের একটি যৌথ প্রেস ব্রিফিং করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপর আধাঘণ্টা একান্তে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। সেখান থেকে ফ্রান্স দূতাবাসে দুপুরের ভোজে অংশ নেবেন মাখোঁ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন তাকে বিমানবন্দরে বিদায় জানাবেন। এ সময় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথরিন কোলোনাও উপস্থিত থাকবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকা ছাড়বেন মাখোঁ।

দীর্ঘ তিন দশক পর এটিই ফ্রান্সের কোনো প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর। ১৯৯০ সালে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরাঁ বাংলাদেশে এসেছিলেন। এর আগে ২০২১ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে দ্বিপক্ষীয় সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরকালে তিনি ফরাসি প্রেসিডেন্টকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *