এক মিনিটের টর্নেডোতে বাংলাদেশের ৬ গ্রাম লন্ডভন্ড

মাত্র এক মিনিটের টর্নেডো ঝড়ে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় দুটি ইউনিয়নের ছয়টি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে গেছে।

শতাধিক ঘরবাড়ি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কমপক্ষে তিন শতাধিক গাছ উপড়ে পড়েছে।

খুঁটি উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগও বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় খোলা আকাশের নিচে ও আশপাশের এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তরা অনেকেই

অবস্থান নিয়েছে। তবে ঝড়ে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলা সদর ইউনিয়ন ও টগরবন্ধ ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। তবে প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের নাম, পরিচয় ও তালিকা পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। দুপুর সোয়া ৩টার দিকে দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে

ধেয়ে আসা টর্নেডো স্বল্প সময় স্থায়ী ছিল। তাতেই উপজেলার সদর ইউনিয়ন বিদ্যাধর, ব্রাহ্মণ-জাটিগ্রাম, বেজিডাঙ্গা ও টগরবন্ধ

ইউনিয়নের মালা, কৃষ্ণপুর-টগরবান, তিতুরকান্দি গ্রামের কাচাপাকা বাড়িঘর, গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফসলি জমিও নষ্ট হয়েছে।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান লায়লা বেগম বলেন, ‘খবর পেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সাধ্যমতো সহযোগিতার চেষ্টা করা হয়েছে।

টগরবন্ধ ইউনিয়নে তিনটি গ্রামের ৬০ থেকে ৭০টি কাচাপাকা
বাড়িঘর ও কয়েকশত গাছপালা ভেঙেচুড়ে উপড়ে পড়ে।’

ফরিদপুরের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আলফাডাঙ্গা সাব জোনাল অফিসের এজিএম ফাহিম হাসান বলেন, ‘আলফাডাঙ্গার পুরো

উপজেলা নয়। ঝড়ে দুইটি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুতের তিনটি খুঁটি ভেঙে পড়ে গেছে।

আরও অনেক আঁকাবাঁকা হয়ে পড়েছে। আমাদের অফিসের লোকজন কাজ করছে। আশা করি, শুক্রবারের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে।’

আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ বলেন, ‘গতকাল সারাদিনই প্রচণ্ড বৃষ্টি ছিল।

বিকেলের দিকে মাত্র এক মিনিটেরও কম সময়ের মতো টর্নেডোতে দুই উপজেলার ৬টি গ্রামের প্রায় শতাধিক কাচাপাকা বাড়িঘর ভেঙে

লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এ ছাড়া কমপক্ষে তিন শতাধিক গাছপালা ভেঙে উপড়ে পড়েছে। খবর পেয়ে উদ্ধারকর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে

ছুটে যাই। বৃষ্টির মধ্যে ভিজে উদ্ধারকাজ করা হয়েছে। ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। স্বাভাবিক হতে সময় লাগতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘অনেকেই ঘরবাড়ি ছাড়া খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নিয়েছে। তাদের নিরাপদ স্থান ও আশপাশের এলাকায় অস্থায়ীভাবে রাখা হয়েছে। এখনো বৃষ্টি হচ্ছে। পুরো এলাকাজুড়ে

অন্ধকার। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোসহ তালিকা করা হবে। প্রাথমিকভাবে কারো নামপরিচয় জানা সম্ভব নয়।’

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ করছে।

শুক্রবার সকালে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করার কথা বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *