মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান মিথ্যা রিপোর্ট দিয়ে বিদেশিদের বিভ্রান্ত করেন বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘হেফাজত নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে। সুশীল সমাজের কিছু প্রতিনিধি, কিছু লবিস্ট বিএনপি-জামায়াত ধর্মান্ধদের টাকা খেয়ে মিথ্যা রিপোর্ট দেয়। আদিলুর রহমান টাকা খেয়ে মিথ্যা রিপোর্ট দিয়ে বিদেশিদের বিভ্রান্ত করেন।’
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। আদিলুর রহমান ও অধিকারের পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের কারাদণ্ডের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপির ভাষায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন আরেকটি রেজ্যুলেশন নিয়েছে। আপনারা বাংলাদেশে টিম পাঠান। আপনারা বলেছেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই, মানবাধিকার হুমকির মুখে। মানবাধিকার কি শুধু মিথ্যাচার করা? আপনারা সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কথা বলেন। বাংলাদেশের দু-এক ভাগ সংখ্যালঘু যদি বলে, আওয়ামী লীগ তাদের নিরাপত্তা দেয়নি, সবচেয়ে ভালো অবস্থানে নেই, আমরা এ দেশে সরকারে থাকব না। আমি ব্যক্তিগতভাবে এমপি হিসেবে বলছি, এ দেশ হিন্দু, খ্রিষ্টান, গারো-চাকমা প্রতিটি মানুষের। এই সংখ্যালঘুদের ৯৯ ভাগ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। তারা আওয়ামী লীগের পক্ষে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে হেফাজতে ইসলাম সমাবেশ করেছিল। আমি সেদিন ত্রাণমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলাম। খুব কাছ থেকে দেখেছি, তাদের খুব অনুরোধ করেছিলাম সমাবেশ শেষ করতে। সন্ধ্যার দিকে সরকারের কাছে খবর এলো, তারা সমাবেশ থেকে উঠে যাবে না। রাতের মধ্যে তারা গণভবন ঘেরাও করে, সচিবালয় ঘেরাও করে সরকারের পতন ঘটাবে। রাত ৮টার দিকে কী দেখেছিলাম? খালেদা জিয়া বিবৃতি দিয়ে বিএনপি নেতাদের হেফাজতের পাশে দাঁড়াতে বললেন। এরশাদ ফ্রিজের ঠান্ডা পানি নিয়ে হেফাজতের পাশে দাঁড়ালেন, খাবার নিয়ে দাঁড়ালেন। সারা দেশ আতঙ্কগ্রস্ত। গণভবন ঘেরাও হবে কি না, সচিবালয় ঘেরাও হবে কি না, হেফাজতের কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, নাকি বিএনপির কাছে দেবে ক্ষমতা—এমন এক পরিস্থিতি। আপনারা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি, রাত ৩টার মধ্যে শাপলা চত্বর পরিষ্কার হয়েছিল। সেখানে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছিল ঢাকা মহানগরের নেতারা।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, হেফাজতের সেই সমাবেশে ৬১ জন মানুষ মারা গেছেন—এর চাইতে বড় মিথ্যাচার আর কী হতে পারে। সে মিথ্যাবাদীর যদি বিচার হয় আইনে, সেটা কি অন্যায়? বিএনপি একটানা আন্দোলন-সংগ্রাম করছে, একই দাবি নিয়ে ২০১৩ সাল থেকে আন্দোলন করছে। শেখ হাসিনা পালাবার পথ পাবে না—একই কথা বারবার বলছে। শেখ হাসিনার পতন না হলে তারা কোনো নির্বাচনে যাবে না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির বক্তব্য দেন।