শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে একটি’ রাজনৈতিক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রমের ক্ষতি হওয়ায় লজ্জিত ও বিব্রত’ শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ক্ষমা চেয়েছেন। এ জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ করে রাজনৈতিক’ সভা-সমাবেশ করা যাবে না। তবে সে এলাকায় বিকল্প ব্যবস্থা না থাকলে স্কুল-কলেজ বন্ধের’ দিন সভা-সমাবেশ আয়োজন করা যাবে।
আজ বুধবার (২৭ জুলাই) রাতে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে’ বঙ্গবন্ধু অলিম্পিয়াড ও শিক্ষাঙ্গন ডটকমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। গত সোমবার’ (২৫ জুলাই) রাজধানীর দক্ষিণখানে চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় এস এম মোজাম্মেল হক শিক্ষা’ কমপ্লেক্সের মাঠে থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের’ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি।
শিক্ষামন্ত্রী সন্ধ্যায় ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলেও অনুষ্ঠানের’ প্যান্ডেল সাজানো এবং ব্যানার-পোস্টার টানানোর কারণে ওইদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছিল বলে গণমাধ্যমের খবরে’ উঠে আসে। বুধবার রাতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে কথা বলেন’ শিক্ষামন্ত্রী। দীপু মনি বলেন মানুষের চাপে সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় আমাদের খেলার মাঠের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
এখন খেলার মাঠ বলতে আমাদের’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যে খোলা মাঠ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা-ই বুঝি। এর বাইরে খুব বেশি মাঠ নেই। আমরা সামাজিক’ রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক ধর্মীয় যেকোনো অনুষ্ঠান করি না কেন সেগুলোতে দেখা যায় বিকল্প’ ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন মাঠ বা প্রাঙ্গণ ব্যবহার করি। আমাদের একটা মোটামুটি নির্দেশনা আছে যে শিক্ষা সংক্রান্ত অনুষ্ঠান’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে হবে। কিন্তু অন্য যেকোনো অনুষ্ঠান হাট বাজার বা মেলা বসাতে আমরা’ নিরুৎসাহিত করি।
কোনোভাবেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষাকার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হয় সেদিকে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। তিনি বলেন’ আমি আসলে খুবই বিব্রত। এটা আমার অজান্তেই ঘটেছে। আমি গত পরশুদিন ঢাকার’ দক্ষিণখানে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে গিয়েছি। আমি চলে আসার পর জেনেছি যে সেখানে আশপাশের বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান’ সেই মাঠ ব্যবহার করে। সেখানে সেই রাজনৈতিক সমাবেশটি হয়েছে।
পরে আমি খোঁজ নিয়ে জানলাম’ আমাকে বলা হলো সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শিক্ষাকার্যক্রম চলেছে। যদিও বলা হয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম’ চলেছে আসলে কতটা চলেছে সেটা আমি জানি না। ওখানে যখন প্যান্ডেল করা হয়েছে তখন শিক্ষাকার্যক্রম একেবারে নির্বিঘ্নে হয়েছে’ এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। সে কারণে আমি সত্যিই ভীষণভাবে লজ্জিত ও দুঃখিত। দীপু মনি বলেন আমি শিক্ষা’ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি। সেখানে বেশ কয়েকটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের’ মাঠে সেই জনসভাটি হয়েছে।
আমি জানি না ওখানে বিকল্প কোনো মাঠ ছিল কি না। যদি না থাকে যারা এই ধরনের অনুষ্ঠান করেন সেটি কোনো’ রাজনৈতিক অনুষ্ঠান হোক সামাজিক অনুষ্ঠান হোক ব্যবসায়িক বা অন্য কোনো অনুষ্ঠান’ হোক যদি কোনো বিকল্প থাকে বিকল্প জায়গায় করা আর যদি বিকল্প না থাকে তাহলে যেন শিক্ষাকার্যক্রম কোনোভাবে ব্যাহত না হয় অথবা’ ছুটির দিনে করা হয়। শিক্ষামন্ত্রী বলেন সবার কাছে আহ্বান করব যদি এ ধরনের অনুষ্ঠান’ করা হয় তাহলে যেন ছুটির দিনে করা হয় এবং ওই প্রাঙ্গণ নষ্ট হবে না ক্ষতিগ্রস্ত হবে না সেগুলোর নিশ্চয়তা’ বিধান করেই যেন সেটি করা হয়। মন্ত্রী আরও বলেন গত মঙ্গলবার আর বুধবার কোথাও পাবলিকলি কথা বলার সুযোগ হয়নি তাই আমি এই সুযোগটি’ গ্রহণ করলাম। আশা করি আপনারা ক্ষমা করবেন।