রাজন’গর (মৌলভীবাজার) থে’কে আব্দুল আজিজ আধুনিক যুগেও পি:ছিয়ে পড়া জন:গোষ্ঠী মাটির বিস্কুট খেয়ে ক্ষুধার জ্বা’লা মেটাচ্ছেন।
অ’বাক করার মতো এমন ঘটনার বাস্তব চিত্র ‘দে খা গেছে মৌ’লভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার জু’গির বিল লাগাটা ন’দী পারের শব্দকর সম্পাদায়ে।’ এছাড়াও জেলার ‘শ্রীমঙ্গল ও রাজনগরে মাটির বিস্কুটের প্রচলন রয়েছে।
এক সময় আমাদের দেশে সেই বি’স্কুট তৈরী হয়ে থাকলেও আগের মতো’ এর কদর নেই। ‘তবে আফ্রিকার বিভিন্ন দরিদ্র দেশের মানুষেরা আজ’ও জীবন বাঁ’চাতে মাটির বিস্কুটের উপরই নির্ভরশীল’। এঁটেল মাটি দিয়ে’ তৈরি এই বিস্কুটের নাম ছিকর।
‘১৯৭০ থেকে ১৯৯০ সালের’ দিকে ছিকর সিলেটের মৌলভী”বাজার ও হবিগ’ঞ্জের বিভিন্ন গ্রামে নি¤œবিত্ত সমাজে প্রচলিত এক ‘বিশেষ খাবার ছিল। অনেকের মতে,’ শুধু ক্ষুধা নিবারণের ‘জন্যই নয় এক ধরনের অভ্যাসের বশেই লোকজন ছিকর’ খেত।
কমলগঞ্জের লাগাটা গ্রামের ‘ছিকর শিল্পীরা জানান, ‘পাশের লাগাটা নদীর তীর থেকে এঁ’টেল মাটি সংগ্রহ করে আম’রা ছিকর তৈরীর প্রক্রিয়া শু’রু করি। প্রথমে মাটি ভিজিয়ে রেখে মিহি করে মন্ড তৈরী করা হয়। মন্ড থে কে ছিকর তৈরি হয়।
লাগাটা গ্রামের রবে ‘ন্দ্র শব্দকর জানান,’ আমরা পিছিয়ে পড়া জন’গোষ্ঠীর সদস্য। ‘পূর্ব পুরুষদের রেওয়াজ অনুযায়ী ছিকর তৈরীর কাজ ক’রে আসছি। আ’মাদের অভাবের সংসার। পুড়ামা’টির বিস্কুট ছিকর ‘খেয়ে অনেক সময় ক্ষুধাও নিবারণ করি।
এলাকা’র মহন শব্দকর জা’নান, ছিকরের কদর আর আগের মতো ‘নেই। আমরা হারিয়ে ‘যাওয়া ঐতিহ্য ধরে রেখেছি। ন’দীর তীর থেকে এটে’ল মাটি সংগ্রহ করে পানি দিয়ে ভিজিয়ে ন’রম করি।
তারপর’ কয়েক ধাপে মাটি মাখিয়ে আরো মসৃণ করা হয়’। এ সময় ছাঁচে ফেলে প্রথমে তৈরী হয় মন্ড। ‘তারপর কাঠের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে চ্যাপ্টা করে বড় টুকরা ক’রা হয়। এরপর চাকু’ দিয়ে গ্রাহকের চাহিদা মত’ কাটা হয় বিভিন্ন আকা’র আকৃতির ছোট বড় মাটির বিস্কুট।
কা’টা কাঁচা বিস্কুট এক’ ধরণের বিশেষ চুলায় পোড়ানো হয়’। তারপর একটি মাটি’র হাঁড়ির নিচের অংশ ভেঙ্গে সেখানে’ লোহার সিক ‘দিয়ে তৈরি চালুনি বসানো হয়। ওই চালুনিতে মা’টির বিস্কুট বসিয়ে ‘ছিকরের গায়ে ধানের তুষের আগুনের মৃদু তাপ দি’য়ে পো’ড়ানো হয়।
সতর্কতার সাথে ছিকরের ‘গায়ে ধোয়া লাগানো হয়। ‘২ ঘন্টা পর ছিকরের গা’য়ে কালচে ‘রং ধারণ করে সুঘ্রাণ তৈরী হয়।
স্বপ্না শব্দক’র জানান, ছিকরের ব্যাপক’ জনপ্রিয়তা ছিল। এখন আগের মতো’ না থাকলেও সখে’র বশে অনেকে নিয়মিত ‘খেয়ে থাকেন। এ লাকা ভেদে ছিকরের স্বাদও ভিন্ন। ছিক ‘রের মন্ড তৈরী র ‘সময় গোলাপজল ও আদার রস দেয়া হয়।
এতে মাটির সঙ্গে পোড়ানোর সময় অদ্ভুত সুন্দর এক স্বাদ’ পাওয়া যায়। ‘ রক্ত শূন্যতা ও খনিজের ঘাটতি পুরণে ‘গর্ভবতী নারীদের কাছে’ ছিকরের জনপ্রিয়তা রয়েছে। ত’বে এ’ই ধারণায় স্বা’স্থ্য বিজ্ঞানের মতে কোন প্রমাণ নেই।
বিষয়টি নি’য়ে কথা হ’লে ডা. মোহাম্মদ আফজালুর রহমান ‘জানান, খাদ্য ‘হিসেবে মাটির বিস্কুট স্বাস্থ্য বিজ্ঞানে সর্মথন ক’রে এর কো’ন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে জা’না গেছে, মৌলভী’বাজারের পাহাড়ি এলাকার হিন্দু সম্প্রদা’য়ের নারীরা এইস’ব ছিকর তৈরি করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিক্রি ক’রতেন। আবার ‘স্থানীয় মৃৎ শিল্পীরা ছিকর তৈরি করে বাজারজাত’ করতেন।
বর্ত’মানে ছিকরের কদর কমে যাওয়ায় ‘ছিকর শিল্পীরা ‘পেশা পরিবর্তন করেছেন। তবে এখনো দে’শের বিভিন্ন এলাকায় ছিকর তৈরি ও খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। ‘এ ক সময় মা”টির
এই বিস্কুট খেয়ে পেট ভরলেও মানুষ আধুনিক যুগে ‘এসে এর ব্যবহার ছেড়ে দিয়েছেন। বিলুপ্ত প্রা”য় এই শিল্প ম’নে করিয়ে দেয় অতীতের অন্ধকারের সময়কে।